নিউজ ডেস্ক: রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে ফের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নাম করে সোমবার বলেন “নারায়ণ, তুমি আরও সিরিয়াস হও। নিজেদের যোগাযোগ আরও বাড়াও।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য সচিবকে বলেন, “তোমাকে আরও আইএএস দিয়েছি। আমার খারাপ লেগেছিল শুনে, সুপ্রিম কোর্টে একজন বলেছিলেন, বাংলার হাসপাতালে তুলো পাওয়া যায় না।” তিনি বলেন, “কোনও ভাবেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ‘এক্সপায়ার্ড ওষুধ’ স্যালাইন ব্যবহার করা যাবে না। প্রতি ৩ মাস অন্তর পরীক্ষা করবেন সুপার, প্রিন্সিপালরা।”
মমতা বলেন,”নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে বলব সব মেডিক্যাল কলেজে স্পোর্টস ও কালচারাল সক্রিয়তা বাড়ুক। কলেজ টু কলেজ প্রতিযোগিতা হোক। হাসপাতালের মধ্যে প্রতিযোগিতা হোক। মানসিকতার বিকাশ হোক। ইএসআই কর্পোরেশনের ডাক্তারদের জন্য আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা করব। সিনিয়রদের বলব, জুনিয়রদের ওপর সব ছেড়ে দেবেন না। আপনারা আট ঘণ্টা অন্তত সরকারি হাসপাতালে দিন। কোনও জরুরি রোগী থাকলে সরকারি হাসপাতালে ডেকে নিয়ে চিকিৎসা করুন।
প্রসঙ্গত, আর জি কর-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী আন্দোলনে বার বার প্রশ্ন উঠেছিল স্বাস্থ্যসচিবের ভূমিকায়। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম দাবি ছিল স্বাস্থ্যসচিব পদ থেকে নিগমের অপসারণ। তবে মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই পাশে থেকেছেন নিগমের। প্রতি বারই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণের দাবি মানা সম্ভব নয়।
নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচার, হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ ১০ দফা দাবিতে সল্ট লেকের সেক্টর ফাইভে স্বাস্থ্যভবনের সামনে অনির্দিষ্টকাল অবস্থানে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ওই ১০ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ। মমতা সেখানে আচমকা চলে যান। তার পরে তাঁর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের একাধিক বৈঠক হয়। প্রতিটি বৈঠকেই নিগমকে অপসারণ করার দাবি ওঠে। কিন্তু প্রতিটি বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, নিগমকে সরানোর প্রশ্ন ওঠে না। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ কয়েক জন পদস্থ পুলিশ অফিসার এবং স্বাস্থ্য আধিকারিককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সেই নিগমের কাজ নিয়ে এ বার চিকিৎসকদের সম্মেলনেই প্রকাশ্য মঞ্চে অনুযোগের সুর মমতার গলায়। দফতরে আধিকারিক স্তরে মতানৈক্য কমাতে যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করতে বললেন তিনি।