নিউজ ডেস্ক: একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ। ঢাকা-সহ দেশটির বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ক্যাম্পাসের ভিতরে ও বাইরে লাঠি হাতে অন্দোলন করছে।
মাঝরাতে হস্টেল থেকে থেকে বেরিয়ে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী রাজপথ দখল নিয়ে নির্যাতকদের দ্রুত কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব। পুলিশ-সহ নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অপদার্থতা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করছে মহিলারা। এর আগেও একাধিকবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি ওঠে।
শেষমেষ চাপে পড়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্যাতকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি বলে জানিয়েছেন। যদিও তার আগে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামনে এগিয়ে দেওয়া হয় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে। তিনি ঘোষণা করেন, নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত শেষ করা হবে পনেরো দিনে। বিচার হবে ৯০ দিনের মধ্যে। সরকার এজন্য দ্রুত আইন পরিবর্তন করবে বলেও সূত্র মারফৎ খবর।
বাংলাদেশ জুড়ে নারীর উপর নির্যাতনের ঘটনা বিগত মাসগুলিতে ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশে যেন নির্যাতনের উৎসব লেগে গিয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় হল, দেশ যখন নারীর নির্যাতনের ঘটনায় ঘটনায় উত্তাল, তখন গণ অভ্যুত্থানের কারিগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ও তাদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা মুখে কুলুপ এটে আছেন। নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহরা চুপ। প্রতিবাদ করে বিবৃতিও দেয়নি ছাত্র নেতৃত্ব।
এই ঘটনার মাঝে পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের আর এক বিশেষ সহকারী। শিক্ষা বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। বাংলাদেশ সরকারের একাধিক সুত্র জানাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের বিগত সাত মাসে একাধিক উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন অথবা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের দাবি নসাৎ করল বাংলাদেশ সেনা বাহিনী। ভলকার তুর্ক বলেন, গত বছর জুলাই-অগাস্ট মাসের আন্দোলন দমনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে কঠোর পদক্ষেপ করেনি সেটা রাষ্ট্রসংঘের কৃতিত্ব। ভলকার তুর্কের ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে সরব হয় দেশের জনগণ। শেষমেশ সেনাবাহিনী বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস থেকে তাদের কাছে কোনও সতর্কবার্তা পায়নি।