নিউজ ডেস্ক: আদালতের নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা। কলকাতা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞাকে ঢাল করে নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ করায় আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল রাজ্য। ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়লেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। বিচারপতিদের সামনে পড়ে ‘ভুল’ স্বীকার করলেন তিনি। বললেন, ‘‘ভবিষ্যতে এ ভুল আর হবে না!’’
প্রসঙ্গত, ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া তারা বন্ধ বা বিলম্বিত করছে। সেই ইস্যুতে নতুন করে মামলা হয় আদালতে। এরপর , কেন সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকাল বন্ধ করা হচ্ছে, তা জানতে চেয়ে ১২ মার্চ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ভার্চুয়ালি তলব করেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। সে-মত আজ হাজিরা দেন মুখ্যসচিব।
এদিন বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘‘২০১০ সালের আগে যাঁরা ওবিসি শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। আদালত তা আগেই স্পষ্ট করেছিল।’’ ‘‘আমাদের উপরে দোষ চাপাবেন না। বলবেন না যে আমরা চাকরিতে বাধা দিয়েছি।’’
এর উত্তরে মুখ্যসচিব বলেন, আদালতের নির্দেশ সব দফতরকে পাঠানো হয়েছে। ল’অফিসার ইত্যাদির পরামর্শে একটু দেরি হয়েছে। তবে এটা একটা ভুল সেটা স্বীকার করছি।”
এরপর বিচারপতি মনোজ পন্থের উদ্দেশ্যে এক তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন। বলেন, ‘‘আপনি সবচেয়ে বড় আধিকারিক। আপনার লোকেরাই আপনাকে মানছেন না। এটা আমাদের কাছে খারাপ লাগছে। আপনার কথা না শুনলে আর কার কথা শুনবেন ওঁরা?” তখন মুখ্যসচিব বিচারপতিকে বলেন, “আমি এবিষয়ে সতর্ক হব।”
উল্লেখ্য, গত বছর ২২ মে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশ ছিল, ২০১০ সালের পরে তৈরি সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে এবং ওই সব সার্টিফিকেট ভবিষ্যতে কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। যদিও হাই কোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। তবে হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত। সেখানে রাজ্যের মামলাটি এখন বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে।