নিউজ ডেস্ক: শ্বশুরের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী জামাই! হ্যাঁ, এটাই সত্যি হতে চলেছে রাজ্যে। ইডির প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজসাক্ষী হচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। এরমধ্যেই তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছে ইডি।
এই প্রথম নিয়োগ দুর্নীতির কোনও মামলায় কোনও অভিযুক্ত রাজসাক্ষী দিতে রাজি হল। ফলে একদিকে যেমন বিপদ বাড়তে চলেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, তেমনি বিপদে পড়তে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এক্ষেত্রে পার্থ বা অভিষেক কীভাবে ফাঁসতে পারেন? চলুন সেদিকে নজর দেওয়া যাক।
নিয়োগ দুর্নীতির খোঁজ করতে গিয়ে পিংলায় একটি অভিজাত স্কুলের খোঁজ পায় ইডি। ওই স্কুলটি ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী’র নামে। পরে জানা যায়, স্কুলের চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। কল্যাণময় আবার থাকেন নিউইয়র্কে। তাঁকে বারবার তলব করা হয়। শেষমেষ তিনি ইডির কাছে জবানবন্দি দিয়ে সবকিছু জানিয়ে দেন।
কিন্তু সেখান থেকে কী জানা যায়? দেখা যায় পিসি সরকারের ম্যাজিকের মতো পার্থ কিছু লোকজনকে টাকা দিচ্ছেন। ওই কালো টাকা সাদা হয়ে ফিরে আসছে তাঁর হাতেই। স্ত্রীর নামে ট্রাস্ট তৈরি করে এই ভেল্কি দেখাতেন। সোজা কথায়, বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট তৈরি করে ডোনেশন নিতেন পার্থ। এভাবেই কালো টাকা সাদা করতেন।
কালো টাকা সাদা করার এই চক্র শুধু পার্থই করতেন না। ইডি, লোয়ার কোর্টে যে পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে অভিষেকের পারিবারিক কোম্পানি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নামে কীভাবে ভুয়ো পদ্ধতিতে টাকার হাতবদল হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, ৪টি সংস্থা থেকে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে ফেক ইনভয়েস তৈরি করা হয়েছে। কীসের কোম্পানি এগুলি? জল সাপ্লাই, ইলেকট্রিক কেটলি, চশমা, কার্ড সাপ্লাই। এছাড়াও ২টি কনসালটেন্সিতে পরামর্শ দিত লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস।
এরজন্য ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিতে টাকা ঢুকেছিল ৪৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।ওই বছরই ২৭ মে, টাকা ঢুকেছিল ৪৫ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি টাকা ঢুকেছিল১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। এছাড়াও অন্য খাতে কোটি কোটি টাকার গরমিল দেখেছে ইডি। তাই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের ৭ কোটি টাকা অ্যাটাচড করা হয়েছে।
ফলে, ইডির হাতে সবকিছু এসে গেছে। এখন আদালতে প্রমাণ করার দরকার। কল্যাণময় রাজসাক্ষী হলে সেই ভিতরের সব কথা বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। পার্থর বান্ধবীর ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকা কোথা থেকে এসেছিল, কীভাবে এই কালো টাকা সাদা করা হতো, সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে একে একে। আর তাই তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতাই যে বিপদে পড়তে পারেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।