নিউজ ডেস্ক: আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি হোক কলকাতা হাই কোর্টে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন দাখিল করেছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা। সেই আবেদনে সাড়া দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে আর জি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন মামলার পরিবারের দায়ের করা আবেদনের শুনানি হবে কলকাতা হাই কোর্টে।
নির্যাতিতার পরিবারের আবেদন ছিল, সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে দিল্লি যাওয়া তাদের জন্য অসুবিধাজনক, তাই কলকাতা হাই কোর্টে শুনানি হলে তারা সহজে উপস্থিত হতে পারবেন। সোমবার আর জি কর মামলা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই এই বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পরিবারের আইনজীবী করুণা নন্দী। এরপরই আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এবার মামলা শুনতে পারবে হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চ।
অভয়ার মা-বাবার অভিযোগ , সিবিআই তদন্তে তারা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তারা অন্য কোনো নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি জানিয়েছিলেন, পাশাপাশি আরো কিছু সন্দেহভাজন অপরাধীকে তদন্তের আওতায় আনার আবেদন করে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে মামলা দায়ের করে অভয়ার পরিবার। কিন্তু বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি বিচারাধীন থাকার কারণে তিনি এই মামলাটি শুনতে পারবেন না। এরপর, অভয়ার পরিবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। আবেদন খতিয়ে দেখে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার শুনানির জন্য কলকাতা হাই কোর্টে অনুমতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৯ অগস্ট মাসে ডিউটিতে থাকাকালীন আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন করা হয়। এরপর সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ। ১০ আগস্ট সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পর আগামী ১৩ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার চলে যায় সিবিআই-এর হাতে। গ্রেফতার হয় কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি।
১৮ আগস্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। ৭ অক্টোবর মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম উল্লেখ করে সিবিআই চার্জশিট পেশ করে আদালতে। ৪ নভেম্বর চার্জগঠন করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে। ১১ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। এর পর ১৬২ দিনের মাথায় ১৮ জানুয়ারি ২০২৫-এ সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ২০ জানুয়ারি, সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবনের কারাদণ্ড দিয়েছিল শিয়ালদহ আদালত। বিচারক অনির্বাণ দাস ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩ (১)— এই তিনটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সঞ্জয় রায়। সঙ্গে জরিমানা করা হয় ৫০ হাজার টাকা। জরিমানার অর্থ দিতে না পারলে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি নিহতের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে।