নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ২০২৪-২৫ মরসুমের জন্য মহিলা ক্রিকেটারদের ঘরোয়া চুক্তি ঘোষণা করেছে। এবার ৯০ জন মহিলা ক্রিকেটারকে বিভিন্ন বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে— যার মধ্যে রয়েছেন ১৮ জন অনূর্ধ্ব-১৯ খেলোয়াড়, ৬২ জন উদীয়মান প্রতিভা এবং ১০ জন অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। এটি দ্বিতীয়বারের মতো পিসিবি মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য ঘরোয়া চুক্তির ঘোষণা করল।
তবে চুক্তি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ, চুক্তিবদ্ধ মহিলা ক্রিকেটারদের মাসিক বেতন নির্ধারিত হয়েছে মাত্র ৩৫,০০০ পাকিস্তানি টাকা, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার টাকা। আশ্চর্যের বিষয় হল, পাকিস্তানে অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মাসিক বেতন ৩৭,০০০ টাকা— অর্থাৎ মহিলা ক্রিকেটারদের বেতন শ্রমিকদের চেয়েও কম।
এছাড়া চুক্তিটি প্রায় ৯ মাস দেরিতে প্রকাশিত হয়েছে, যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি নির্ধারিত হয়েছে ২০,০০০ পাকিস্তানি টাকা, যা প্রায় ৬,০০০ ভারতীয় টাকা। সমস্যা আরও জটিল কারণ, ঘরোয়া মরসুমে একজন ক্রিকেটার সর্বাধিক ৩১ দিন খেলতে পারেন। ফলে, পুরো বছরে তাঁদের উপার্জন অত্যন্ত সীমিতই থেকে যাচ্ছে।
ভারতেও নারী ক্রিকেটারদের জন্য বেতন কাঠামো খুব বেশি ভালো নয়। একদিনের ঘরোয়া ম্যাচে একজন সিনিয়র মহিলা ক্রিকেটার পান মাত্র ২০,০০০ হাজার টাকা। যদিও উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ (WPL) শীর্ষস্তরের খেলোয়াড়দের রোজগারে কিছুটা উন্নতি এনেছে, তবে ঘরোয়া পর্যায়ে বেতন বৈষম্য এখনো বড় সমস্যা।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া মহিলা ক্রিকেটাররা বছরে গড়ে ৯৬,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ₹৮৩ লক্ষ) আয় করেন। সেই তুলনায় পাকিস্তান ও ভারত অনেক পিছিয়ে, যা স্পষ্টভাবেই নারী ক্রিকেটের বিকাশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এদিকে আর্থিক সঙ্কটে পিসিবি পুরুষদের ঘরোয়া টুর্নামেন্টেও ম্যাচ ফি কমিয়েছে। ন্যাশনাল টি-২০ কাপের ফি এক ধাপে ৪০,০০০ পাকিস্তানি টাকা থেকে কমিয়ে ১০,০০০ টাকা করা হয়। পরে খেলোয়াড়দের অসন্তোষের কারণে তা ৩০,০০০ টাকায় উন্নীত হলেও আগের তুলনায় তা এখনও কম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আর্থিক সঙ্কট এবং বেতন কাঠামোর বৈষম্য পাকিস্তানের ক্রিকেট ভবিষ্যতের জন্য বড় চ্যালেঞেঞ্জ হয়ে উঠছে।