নিউজ ডেস্ক: যত দিন এগোচ্ছে ধীরে ধীরে তপ্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ। বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও হচ্ছেনা বৃষ্টি। গরমে নাজেহাল অবস্থা সকলেরই। এমত পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে ঝড় ও বৃষ্টি কম হওয়ার পূর্বাভাসে, অনেক আবহাওয়াবিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এতে কেবল তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে না, বরং পরিবেশের উপরও বিরূপ প্রভাব (West Bengal climate change effect) পড়বে।
পূর্বাভাস আছে, বৃষ্টি নেই-
গত এক মাসে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টিতে অন্তত ৪৪ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে, জানাল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বৃষ্টির পূর্বাভাস (rain forecast) রয়েছে, তবে যেখানে যতটা বৃষ্টি হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না। কোনও কোনও জেলায় বৃষ্টিতে ঘাটতি রয়েছে ১০০ শতাংশ বা তার কাছাকাছি। অর্থাৎ, সম্ভাবনা থাকলেও গত এক মাসে সে সব জেলায় বৃষ্টি একেবারেই হয়নি।
রাজ্যে ঝড় ও বৃষ্টি কম হওয়ায় বিরূপ প্রভাব পরিবেশের উপর-
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: এই ধরনের আবহাওয়ার পরিবর্তন জলবায়ু পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ, একদিনে না হলেও দিনের পর দিন ধরে এই আবহাওয়ার পরিবর্তন একসময় জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate change) কারন হতে দাঁড়াবে, যা ভবিষ্যতে চরম আকার ধারন করতে পারে।
তীব্র তাপ বৃদ্ধি: ঝড় ও বৃষ্টি কমলে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে, যা জনজীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে।
জলস্তরের হ্রাস: বৃষ্টি কমলে নদী ও জলাশয়ের জলস্তরও কমে যেতে পারে, এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই পানীয় জল ও সেচের জন্য সংকট তৈরি করবে।
পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব: অন্যদিকে আবার বৃষ্টি কমলে কৃষি, জলসম্পদ এবং বাস্তুসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
খরা পরিস্থিতি তৈরি: এছাড়াও বৃষ্টি কমলে খরা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তা এবং মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করবে।
আরও পড়ুন: ভ্যাপসা গরমে কাহিল মহানগরী, পূর্বাভাস সত্ত্বেও বৃষ্টির দেখা নেই
বৃষ্টির ঘাটতি পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই-
হাওয়া অফিসের পরিসংখ্যান বলছে, গত এক মাসে দক্ষিণ দিনাজপুরে বৃষ্টির ঘাটতি ১০০%। মালদহেও ঘাটতির পরিমাণ প্রায় কাছাকাছি, ৯৮%। কলকাতায় এক মাসে প্রয়োজনের তুলনায় ৮৭ % কম বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনায় ৮০%, হুগলিতে ৯০%, হাওড়ায় ৬০%, নদিয়ায় ৭৫%, উত্তর দিনাজপুরে ৮৪%, জলপাইগুড়িতে ৭৬%, দার্জিলিঙে ৭৮%, কালিম্পঙে ৮৬%, আলিপুরদুয়ারে ৮৪% এবং কোচবিহারে ৯০% ঘাটতি ছিল বৃষ্টিতে। চৈত্র মাস থেকেই বাংলার জেলায় জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্রীষ্মে উত্তাপ আরও বাড়তে পারে। ফলে বৃষ্টির ঘাটতি পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির এই ঘাটতি বাড়তে থাকলে সত্যিই পরিবেশের উপরও বিরূপ প্রভাব পড়বে। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আমাদের জনজীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে।