নিউজ ডেস্ক: রাজ্য পুলিশের প্রধান পদে নিয়োগের জন্য এবার আর ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (UPSC) সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে হবে না। রাজ্যই ডিজিপি নিয়োগ (WB DGP Rule Change) করবে। মঙ্গলবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিজিপি (DGP) নিয়োগে পৃথক বিধি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। নতুন বিধির অধীনে একটি কমিটি ডিজিপি নিয়োগে সিদ্ধান্ত নেবে।
বর্তমানে রাজ্য পুলিশের ডিজি নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনিয়র পুলিশকর্তাদের নামের তালিকা পাঠাতে হয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে। সেই তালিকা যাচাইয়ের পর সেখান থেকে তিনজনের নাম প্রস্তাব করে ইউপিএসসি। সেই তিনজনের মধ্যে থেকে একজনকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বেছে নেওয়া যায়। এবার এই নিয়মই পরিবর্তন করতে সিদ্ধান্ত নিল মন্ত্রিসভা।
৮ এপ্রিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সেখানেই ডিজি নিয়োগ নিয়ে নয়া নিয়ম প্রনয়ণের প্রস্তাবে শিলমোহর দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজীব কুমার রাজ্য পুলিশের অস্থায়ী ডিজি পদে রয়েছেন। তাঁর চাকরির মেয়াদ আর ৬ মাস। এই আবহে ডিজি নিয়োগ নিয়ে নয়া নিয়ম আনল নবান্ন। এই নিয়মে রাজীব কুমারকে স্থায়ী ডিজি পদে নিয়োগ করার বাধা পার করা যাবে। দাবি করা হচ্ছে, আগের নিয়মে যদি রাজীব কুমারের নাম ডিজি পদে সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হত, তাহলে তাতে শিলমোহর পাওয়া যেত না। এই আবহে এতদিন ধরে রাজীবকে অস্থায়ী ডিজি পদে রাখা হয়েছিল। এদিকে রাজীবকে স্থায়ীভাবে ডিজি করা হলে আরও দু’বছর তিনি সেই পদে থাকতে পারবেন।
উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলিতে রাজ্যে আমলা বা পুলিশ নিয়োগ বা মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে বেশ কয়েকবার মতবিরোধ হয়েছে রাজ্য সরকারের। কখনও মুখ্যসচিবের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেও দিল্লির কাছ থেকে সাড়া পায়নি রাজ্য, আবার কখনও পুলিশ কর্তাদের কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে ডেকে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে কেন্দ্র। এই সবের মাঝেই এবার রাজ্য পুলিশের ডিজি নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগী আদিত্যনাথের পথ অনুসরণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে গত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ডিজি পদে নিয়োগের জন্যে নয়া নিয়ম চালু করেছিল উত্তরপ্রদেশ (Uttarpradesh)। এবার সেই নিয়মই গ্রহণ করল বাংলা।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ২০০৬ সালে প্রকাশ সিং মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বেশ কিছু নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশের লক্ষ্য ছিল রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্বে স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। রাজ্য এই নয়া বিধি প্রণয়ন করলে আর কোনও নামের তালিকা ইউপিএসসি-কে পাঠানোর প্রয়োজন পড়বে না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের এমন পদক্ষেপ প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।