নিউজ ডেস্ক: উপরাষ্ট্রপতিকে নকল করা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ। বরাবরই বিভিন্ন মন্তব্য করে সংবাদের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দলেরই মহিলা সাংসদকে যৌনগন্ধী কুমন্তব্য করে বিপাকে বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ। মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে কুকথা বলার পরে সেই বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদকে একাধিকবার সংযত হওয়ার জন্যে বলেছিলেন দলেরই অন্যান্য সাংসদরা। তবে তিনি নিজের বাক্যবাণ থামাননি। এদিকে মহিলা সাংসদকে অসম্মান করার ঘটনায় দলের আরও কয়েকজন মহিলা সাংসদ সেই বর্ষীয়ান সাংসদের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
এই গোটা ঘটনা নিয়ে অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট করেছেন। শুধু তাই নয় দলেরই দুই সাংসদ কীর্তি আজাদ এবং সৌগত রায়ের বিরুদ্ধেও কুরুচিকর মন্তব্য করা হয় বলেও অভিযোগ। বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর দাবি, গত ৪ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় কীর্তি আজাদ এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই দুই সাংসদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিতর্ক হয়।
অমিত মালব্যর আরও দাবি, এই বিরোধ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘AITC MP 2024’-এও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দুই সাংসদ একে অপরের প্রতি কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি শেয়ার করা চ্যাটের স্ক্রিনশটে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ‘বহুমুখী আন্তর্জাতিক নারী’ সম্পর্কেও উল্লেখ করেন, যা এই বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় ও শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন ব্যক্তি সম্পর্কে কুমন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কখনও উপরাষ্ট্রপতিকে নকল করে অঙ্গভঙ্গী আবার কখনও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলারও অভিযোগ রয়েছে কল্যাণের বিরুদ্ধে। বিরোধী দল বিজেপিকে কটাক্ষ করতে গিয়ে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর চেহারা নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। বিজেপি সেই সময় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করে। শুধু তাই নয় এক জনসভায় তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাজনৈতিক ‘থাপ্পড়’ মারার কথাও বলেন। তা নিয়েও তৈরি হয় তীব্র বিতর্ক।
উল্লেখ্য, গতবছর ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত যৌথ কমিটির বৈঠকে বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে, বিশেষ করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তীব্র তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন কল্যাণ। কার্যত হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। চরম উত্তেজনার মধ্যে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কাচের জলের বোতল টেবিলে মেরে ভেঙে ফেলেন বলে অভিযোগ। এখন প্রশ্ন কল্যাণের বারবার এহেন ঘটনার পরেও কেন বারবার তাঁর বিরুদ্ধে নরম মনোভাব দেখিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদির নিরাপদ ছাতার তলায় থাকার কারণেই কি বারবার এহেন আচরণ বর্ষীয়ান সাংসদের? উঠছে প্রশ্ন।