নিউজ ডেস্ক: ওয়াকফ আন্দোলনে সারা দেশে নজর কেড়েছে মুর্শিদাবাদ। ওয়াকফ আন্দোলনের নামে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে সংখ্যালঘুরা। হিন্দুদের বাড়িঘর, দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পাশের জেলায় আশ্রয় নিয়েছে হিন্দুরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে রাজ্যপাল। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে না গিয়ে, সংখ্যালঘুদের নিয়ে সভা করেছেন। সেই সভা থেকেই ইন্ডিয়া জোটকে ফের একজোট হয়ে ওয়াকফের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার বার্তা দিয়েছেন। তবে কী সারাদেশেই মুর্শিদাবাদ কান্ড ঘটাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী নেতারা।
রাজ্যে ওয়াকফ আন্দোলনের মাঝেই নেতাজি ইন্ডোরে সংখ্যালঘুদের নিয়ে সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভা থেকে ইন্ডিয়া জোটকে একসাথে হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। ওয়াকফ নিয়ে রাজ্যে যে ধরনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার আঁচ কী সারাদেশেই ছড়িয়ে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী? সব বিরোধী দলকে একজোট করে সংখ্যালঘুদের উস্কে দিতে চাইছেন? প্রশ্নগুলো তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ। আক্রান্ত হিন্দুদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি মমতাকে। তাঁরই দলের নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যেও কোন প্রতিক্রিয়া দেননি। শুধুমাত্র ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা অনুদান করেছেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাঁর সবার আগে ছুটে যাওয়া উচিত। কিন্তু তিনি সেই কাজ না করে পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে ঘটনাস্থলে যাবেন বলে জানিয়েছেন। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মুর্শিদাবাদের এই ঘটনাতেও দোষ চাপিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিএসএফের উপর। বিএসএফ জওয়ানরা নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে দেশ রক্ষায় ব্যস্ত। সেই জওয়ানদের কীভাবে বারবার কাঠগড়ায় তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হয়ে কী করছেন তিনি? তাঁর হাতে তো রাজ্য পুলিশ রয়েছে, তারাই বা কী করছে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক টানা পড়েন।
মুর্শিদাবাদের ঘটনাস্থলগুলি, মালদা দক্ষিণ লোকসভার অন্তর্গত। গত লোকসভা নির্বাচনে সেখান থেকে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী। অন্যদিকে ওয়াকফের বিরোধিতায় উত্তপ্ত হয়েছিল ভাঙর। সেখানেও আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকী বিধায়ক। কংগ্রেসের অভিযোগ, নিজের মাটি তৈরি করতে সাম্প্রদায়িক হিংসায় মদত দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা পরিকল্পিত গেমপ্ল্যান। শাসক দল নিজেদের জমি তৈরি করতে প্রশাসনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
সব মিলিয়ে রাজ্যের ওয়াকফ আন্দোলন এখন সারা দেশের টাইমলাইনে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে মুর্শিদাবাদে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে । নিহতদের পরিবারের হাতে টাকা তুলে দিয়েই কি ক্ষান্ত থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী? বিজেপিকে দোষারোপ করে কি তিনি দায় এড়াতে পারেন? পুলিশ মন্ত্রী হয়ে পুরো ঘটনা কি এড়িয়ে যেতে পারেন তিনি? বাংলার বাতাসে এই প্রশ্নগুলোই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে