নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার ১৫ দিনের মাথায় পাকিস্তানকে সমুচিত জবাব দিল ভারত। গুঁড়িয়ে গেল ৯টি জঙ্গি শিবির।
পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত —
বাহাওয়ালপুর – মার্কাজ সুভান আল্লা – JeM
মুরিড়কে — মার্কাজ তৈবা – LeT
তেহরা কালান — সার্জাল – JeM
শিয়ালকোট — মেহমুনা জোয়া – HM
PoK তে প্রত্যাঘাত—
বারনালা ক্যাম্প – মার্কাজ আহলে হাদিথ – LeT
কোটলি — মার্কাজ আব্বাস – JeM
কোটলি — মাস্কার রাহিল শাহিদ- HM
মুজফফরাবাদ — শাওয়াই নালা ক্যাম্প – LeT
মুজফফরাবাদ — সৈয়দ বিলাল ক্যাম্প – JeM
১৯৭১ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের ১০০ কিলোমিটার ভিতরে গিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ভারতীয় সেনা। ৯টি জায়গায় মোট ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে গিয়ে সেগুলি আঘাত হানে। ভারতের প্রত্যাঘাতে লস্কর ও জৈশের মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর মোট ৭০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আহত ৬০ জনের ওপর।
কখন হামলা চালানো হয়?
তখন মধ্যরাত। ঘুমে অচেতন গোটা ভারত। সেই সময়ই রাত ১টা পাঁচ মিনিটে পাকিস্তানের জঙ্গি শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। আঘাত হানা হয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতেও। রাত দেড়টা পর্যন্ত চলে এই অভিযান। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন সিঁদুর।
পাকিস্তানের কোথায় আঘাত?
বাহাওয়ালপুর – পাকস্তানের ৪টি জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। একযোগে হামলা চালিয়েছে বিমান বাহিনীও। ধ্বংস হয়ে গেছে বাহাওয়ালপুরের মার্কাজ সুভান আল্লা। এটি ভারতীয় সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে। এখান থেকেই জঙ্গি শিবির চালাত জৈশ এ মহম্মদ।
মুরিড়কে – পাকিস্তানের মুরিড়কেতে জঙ্গি শিবিরে গিয়ে আঘাত হানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র। মুরিড়কেতে মার্কাজ তৈবাতে এই হামলা চলে। এটি লস্কর এ তৈবার জঙ্গি শিবির।
তেহরা কালান – তৃতীয় হামলাটি চলে পাকিস্তানের তেহরা কালানে। এখানকার সার্জালে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জৈশ এ মহম্মদ বা JeM-এর জঙ্গি শিবির।
শিয়ালকোট – চতুর্থ আঘাতটি হানা হয় পাকিস্তানের শিয়ালকোটে। সাম্বা থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে এই মেহমুনা জোয়া। এখানে হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গি শিবির ছিল। ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রে তা ধ্বংস হয়ে গেছে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কোথায় হামলা?
বারনালা ক্যাম্প – পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৫টি জায়গায় আঘাত হানে ভারতীয় সেনারা। এর মধ্যে আছে বারনালা ক্যাম্প। এখানকার মসজিদ আহলে হাদিথে লস্করের ডেরা ছিল। নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ১৩ কিমি. দূরে এই ক্যাম্প অবস্থিত। সফল লক্ষ্যে আঘাত হেনে এখানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে লস্করের জঙ্গি শিবির।
কোটলি – পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কোটলি। এখানের মসজিদ আব্বাসে ডেরা ছিল জৈশ এ মহম্মদের। নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৩০ কিমি. দূরে। এই সব জঙ্গি শিবির থেকেই কাশ্মীরে হামলার ষড়যন্ত্র চলতো। সেই ডেরাই আজ মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ভারত।
কোটলি – এই কোটলিতেই আছে মাস্কার রাহিল শাহিদ। হিজবুল মুজাহিদিনের ডেরা। নব্বইয়ের দশক থেকে এখানে ট্রেনিং নিয়েছে জঙ্গিরা। সেই টেরর ক্যাম্পই গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত।
মুজফফরাবাদ – পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফফরাবাদ। জঙ্গিদের অন্যতম আস্তানা। এখানকার শাওয়াই নালা ক্যাম্পে আঘাত হেনে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি লস্কর এ তৈবা বা LeT – র জঙ্গি শিবির ছিল। নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে এটিও ৩০ কিলোমটার দূরে।
মুজফফরাবাদ – এই মুজফফরাবাদের সৈয়দ বিলাল ক্যাম্প ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। এখানে জৈশ এ মহম্মদের ট্রেনিং ক্যাম্প ছিল।
মাসুদের হাহাকার –
ভারতের অপারেশন সিঁদুরে এখন হাহাকার করছে জৈশ এ মহম্মদের মূল হোতা মাসুদ আজহার। এক বিবৃতিতে সে জানিয়েছে, বিমান হামলায় তার পরিবারের ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও পাক মিডিয়ার দাবি, মাসুদের বাড়িতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে এই জঙ্গি শিবিরটি ছিল। এখানে কয়েকশো জঙ্গির ট্রেনিং হতো।
সবমিলিয়ে পরিকল্পনা মাফিক এই জবাব দিল ভারত। পাকিস্তানের কোনও সেনা শিবিরে আঘাত হানা হয়নি। একেবারে নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে বেছে বেছে জঙ্গিদের শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাই প্রমাণ করছে ভারতীয় সেনারা কতটা যোগ্য। ৯টি শিবির বেছে নিয়ে ৯টি শিবিরকে ধ্বংস করেছে তারা। পহেলগাঁও হামলার জবাবে অপারেশন সিঁদুর তাই একশ শতাংশ সফল।