নিউজ ডেস্ক: সাল ১৯৭৫। দেশ জুড়ে জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা। সেসময় প্রধানমন্ত্রীর আসনে ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। এরপর কেটে গিয়েছে ৪টি যুগ। তবে ভারতের সেই কালো অধ্যায় আজও ভোলেনি কেউই। ৫০ বছর পেরোলেও ১৯৭৫ সালের ‘জরুরি অবস্থা’র কথা মনে করাতে ২৫ জুন দেশ জুড়ে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন করার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই মত আগামী ২৫ জুন ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন করার জন্য প্রতিটি রাজ্যে পৌঁছেছে চিঠি। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গ। ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন করতে জন্য চিঠি এসেছে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে। আর সেই চিঠি পাওয়ার পরই ১৮ জুন বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী তীব্র প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial
এ প্রসঙ্গে কী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
“আমরা সবাই জানি জরুরি অবস্থার কথা। সেটা দেশের মানুষ মেনে নেননি। জরুরি অবস্থা দিবস পালন করতে পারত। গণতন্ত্র হত্যা দিবস হত্যা কেন?”
কেন্দ্রকে তোপ দেগে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সংবিধান রোজ বদলানো হচ্ছে। পরিকল্পিত ভাবে ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ এখানেই শেষ নয়। তাঁর সংযোজন , ‘আপনাদের ধর্ম ফেক। আপনারা ফেক ধার্মিক। আপনারা নিজেদের অ্যাজেন্ডা তৈরি করছেন। বাংলার বিরুদ্ধে ভুলভাল কথা বলছেন। পার্লামেন্ট নতুন করে তৈরি করেছেন। তাহলে তো প্রতিদিন গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করতে হবে।”
ঠিক কী নিয়ে আপত্তি মমতার?
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই সংবিধান হত্যা কথাটায় আমার আপত্তি আছে। গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলোকে বিজেপি রোজ ধ্বংস করে চলেছে। ফলে ওরা ওদের মতো পালন করুক, আমরা পালন করছি না।“
বিজেপির বিরুদ্ধে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
বিজেপিকে তোপ দেগে এদিন মমতা বলেন, “জরুরি অবস্থার ৫০ বছর ২০২৪ সালে পেরিয়ে গিয়েছে। ২০২৫ সালে কেন সেই দিবস পালন করা হচ্ছে? এর নেপথ্যে রাজনীতি রয়েছে।”
বিজেপির নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্ত্যবের পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা আসরে নেমেছে বিজেপিও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এমার্জেন্সি ডে বিজেপির পক্ষ থেকে, রাষ্ট্রবাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পালন করা হয়। এ বারেও পালন করা হবে। রাজ্যে ইমার্জেন্সির সময়ে যাঁরা জেল খেটেছেন, তাঁদের আমরা সংবর্ধনা দিই, এ বারেও দেব। মুখ্যমন্ত্রী পালন করলেন, কী না করলেন, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।’
কেন ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন করতে চাইছে কেন্দ্র ?
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন ভারতের কালো অধ্যায়ের শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেছিলেন। অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত হুমকির অজুহাতে নেওয়া এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে নাগরিক স্বাধীনতা স্থগিত করা হয়, রাজনৈতিক বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং গণমাধ্যমের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ২১ মাস ধরে কার্যকর ছিল।
জরুরি অবস্থার সময় তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের কর্মকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিতে ২৫ জুনকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপির (BJP) নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার।
https://x.com/narendramodi/status/1805447851931222354?
‘সংবিধান হত্যা দিবস’ নিয়ে কি বলেছেন অমিত শাহ?
১৯৭৫ সালে জারি হওয়া জরুরি অবস্থার সময় দেশের মানুষ যে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করেছেন তাঁদের সম্মান জানাতেই এই দিনটি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ।
https://x.com/AmitShah/status/1811710157585531372?
জরুরি অবস্থা কী ?
জরুরি অবস্থা: সংবিধানের ৩৫২-৩৬০ অনুচ্ছেদে জরুরি অবস্থার বিধান রয়েছে, যা সরকারকে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ক্ষমতা দেয়।
প্রকারভেদ:
জাতীয় জরুরি অবস্থা (অনুচ্ছেদ ৩৫২): যুদ্ধ, বহিঃশত্রু আক্রমণ, বা অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার কারণে।
রাজ্য জরুরি অবস্থা (অনুচ্ছেদ ৩৫৬): রাজ্যে সাংবিধানিক ব্যর্থতার ক্ষেত্রে।
আর্থিক জরুরি অবস্থা (অনুচ্ছেদ ৩৬০): আর্থিক সংকটে।
সংবিধানে জরুরি অবস্থার বিধান কী?
অনুচ্ছেদ ৩৫২ রাষ্ট্রপতিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা দেয়। ১৯৭৫ সালে “অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা”র অজুহাতে এটি ব্যবহৃত হয়। ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে মৌলিক অধিকার স্থগিত করা সম্ভব হয়।
পরিবর্তন: ১৯৭৮ সালে ৪৪তম সংশোধনী প্রস্তাবনার মাধ্যমে “অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা”কে “সশস্ত্র বিদ্রোহ” দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়।
জরুরি অবস্থা কেন ঘোষণা করা হয়েছিল?
১৯৭৫ সালের ১২ জুন এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইন্দিরা গান্ধীকে ১৯৭১ সালের নির্বাচনে কারচুপির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে, নির্বাচন বাতিল এবং ৬ বছরের জন্য তাঁকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকট (১৯৭৪ সালে ২৯% মুদ্রাস্ফীতি, ১% জিডিপি বৃদ্ধি), জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে বিরোধী আন্দোলন, এবং রেল ধর্মঘটের মতো অস্থিরতা “অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা”র অজুহাতে জরুরি অবস্থার ঘোষণার কারণ হয়।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে ঠিক কী বলা হয়েছিল?
১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন রাজ নারায়ণ। তাঁর অভিযোগ ছিল, অসৎ উপায়ে নির্বাচন করানো হয়েছে এবং নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছিল। ইন্দিরা গান্ধীকে রায়বেরেলি থেকে ১৯৭১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতা অপব্যবহারের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালত তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্বের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, কিন্তু সেখানেও হাই কোর্টের রায়ই বহাল রাখা হয়। সাংসদ হিসাবে ইন্দিরা গান্ধী যে সমস্ত সুবিধা পেতেন, তা বন্ধ করে দিতে বলা হয়। তাঁর ভোটাধিকারও কেড়ে নেওয়ার রায় দেওয়া হয়।
এরফলে কি হল?
ইন্দিরা গান্ধী তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন থেকে ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত ২১ মাস ধরে প্রতি ছয় মাস অন্তর জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন।
কীভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল জরুরি অবস্থা?
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন রাতে রাজধানী দিল্লির বেশিরভাগ মিডিয়া হাউসের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয় যাতে কোন ভাবেই জানাজানি হয়। এরপর ২৬ জুন সকাল ৮টায় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ঘোষণা করেন জরুরি অবস্থার কথা।
কী কী বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল?
• জরুরি অবস্থা চলাকালীন যেমন নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তেমনই সংবাদ মাধ্য়মের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়।
• গ্রেফতার করা হয় একের পর এক বিরোধী নেতাকে। ওই সময়ে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ সরকারের বিরোধিতা করার অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
• বন্ধ হয়ে যায় লোকসভা ও রাজ্যসভার নির্বাচন।
• দেশের কর্মক্ষমতা বাড়াতে রবিবারের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বোনাস, বেতন বৃদ্ধি। খোলা হাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের অধিকার দেওয়া হয়।
• মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য কর ছাড়ের ঘোষণা করেন। আট হাজার টাকা অবধি আয়ের উপরে ছাড় দেওয়া হয়।
• চালু করা হয় রোড পাসের নিয়ম। ন্যাশনাল পারমিট স্কিম চালু করা হয়।
১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার কি কি প্রভাব পড়েছিল?
জরুরি অবস্থার রাজনৈতিক প্রভাব
জয়প্রকাশ নারায়ণ, মোরারজি দেশাই, অটল বিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবানিসহ হাজার হাজার বিরোধী নেতা-কর্মীকে মিসা (Maintenance of Internal Security Act) এর অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়। মিডিয়ার উপর সেন্সরশিপ আর সমস্ত মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছিল ।
কংগ্রেসের পতন: জনগণের ক্ষোভ ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয় ঘটে। জনতা পার্টি প্রথমবার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে।
অর্থনৈতিক প্রভাব
মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব এবং খাদ্য ঘাটতি তীব্র ছিল। জরুরি অবস্থায় শ্রমিক ধর্মঘট নিষিদ্ধ করা হয়, কিন্তু অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি।
মোরারজি দেশাই ভারতের প্রথম অ-কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী –
১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ, ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেন এবং সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা করেন। কংগ্রেস পার্টি ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বে জনতা পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। মোরারজি দেশাই ভারতের প্রথম অ-কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী হন।
MISA আইন কি?
জরুরি অবস্থার সময় সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বিনা অভিযোগে মানুষকে আটক, ধৃত ব্যক্তি ও রাজনৈতিক বন্দীদের উপর নির্যাতন, এবং অবৈধভাবে আইন প্রণয়ন। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণ আইন (MISA) ছিল সবচেয়ে বেশি অপব্যবহৃত আইন। ১৯৭৭ সালে নবনির্বাচিত জনতা পার্টি সরকার MISA বাতিল করে।
পশ্চিমবঙ্গে জরুরি অবস্থার প্রভাব কতটা ছিল?
১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থা জারির সময় পশ্চিমবঙ্গে তখন কংগ্রেস শাসন ছিল। পশ্চিমবঙ্গে, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়। ২৫ জুন রাতভর সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় ও ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা ঘোষণার বক্তব্য লিখেছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গে তৎকালীন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে বামপন্থী ও নকশাল নেতাদের উপর তীব্র দমন চলে। জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাসগুপ্ত, কানু সান্যালসহ হাজার হাজার কর্মী গ্রেপ্তার হন।
সঞ্জয় গান্ধীর নেতৃত্বে জোরপূর্বক নির্বীজন চলে। পশ্চিমবঙ্গে এটি তুলনামূলকভাবে কম ছিল, কিন্তু ভয় ছড়ায়।
কলকাতায় ট্রেড ইউনিয়ন নিষিদ্ধ করা হয়, শ্রমিক আন্দোলন দমন করা হয়।
ছাত্র সংগঠন (যেমন SFI) ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী নিষিদ্ধ করা হয়। মহাশ্বেতা দেবী, মৃণাল সেনের মতো সাহিত্যিক ও শিল্পীরা লেখা ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সংবাদপত্র যেমন আনন্দবাজার পত্রিকা, যুগান্তরের মতো সংবাদপত্রে প্রকাশনার আগে সরকারি পরীক্ষা চালানো হয়। সাংবাদিকরা গোপনে পত্রিকা প্রকাশ করে, যেমন দেশ পত্রিকা।
বেশিরভাগ সংবাদপত্রকেই হয় সরকারপন্থী হয়ে লিখতে বাধ্য করা হয়, না হয় পুরোপুরি নীরব থাকতে বলা হয়—সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে। সরকারের অপকর্ম থেকে পাঠকের মনোযোগ সরাতে সংবাদপত্রে রাজনীতির বাইরে খেলাধুলা, বিনোদন ও সিনেমা সম্পর্কিত খবরে গুরুত্ব দেওয়া হতো। ফলত, প্রথম পৃষ্ঠা ও প্রধান সংবাদ জায়গা করে দিত এসব বিষয়ের জন্য, যাতে রাজনৈতিক তথ্য পাঠকের চোখে না পড়ে।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের ভূমিকা কি ছিল?
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রায় ইন্দিরাকে জরুরি অবস্থার আইনি কাঠামো তৈরির পরামর্শ দেন। তিনি বামপন্থী ও নকশাল আন্দোলন দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেন।
রাজনীতি করতেই কী কেন্দ্রের বিরোধিতা করছেন মমতা?
বুধবার প্রেস কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ শব্দটির বিরোধিতা করে বলেন, “সংবিধান গণতন্ত্রের ভিত্তি, এটি হত্যা বলা যায় না। পশ্চিমবঙ্গ এই দিবস পালন করবে না।“ আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। সমালোচকদের মতে মমতার বিরোধিতা জরুরি অবস্থার সময় নিপীড়িতদের প্রতি অসম্মান এবং তাঁর অতীতের কংগ্রেস প্রীতির প্রভাব। মোদী-বিরোধিতা করতে গিয়ে ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থা নিয়ে রাজনীতি করছে।
এমনকি ২০১৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার পর দেশ পাঁচ বছর ধরে “সুপার জরুরি অবস্থা” পার করেছে, আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি রক্ষা করতে হবে” যা কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের সমালোচনা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়।
সবশেষে বলাই যায় জরুরি অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারের স্থগিতকরণ, ব্যাপক গ্রেপ্তার, এবং মিডিয়া সেন্সরশিপ “সাংবিধানিক হত্যা”র মতো কঠোর শব্দবন্ধের ব্যবহারকে ন্যায্য প্রতিফলিত করে।