নিউজ ডেস্ক: জেন জি-দের মধ্যে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহৃত অন্যতম শব্দগুলির মধ্যে একটি হল ফোমো। অর্থ্যাৎ ফিয়ার অফ মিসিং আউট বা হারিয়ে যাওয়ার ভয়। এই শব্দটির উৎপত্তি ২০০৪ সালে যখন সোশ্যাল মিডিয়া ও স্মার্ট ফোন ধীরে ধীরে সামাজিক ভাবে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছিল। সামাজিক কাজকর্ম ও সংযোগ বজায় রাখার জন্য মানুষ সামাজিক মেলামেশার উপর জোর দেয়। আর সেখানেই ধীরে ধীরে তৈরি হয় এই ভয়। স্কুল, কলেজ, অফিসের সহকর্মী এমনকী বন্ধুত্বের মাঝেও অ্যানজাইটি থেকে এই ভয় তৈরি হতে পারে। দুটি ধাপে এই ফোমো মানুষের মনে তৈরি হয় ও প্রভাব বিস্তার করে। তবে এটি কোনো মানসিক ব্যধি নয় বরং একটি অনুভূতি যা ভাবনা থেকেই তৈরি হয়। তবে ফোমোর মারাত্মক বহিঃপ্রকাশ অন্য মানসিক রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবেও বিবেচিত করেন মনোবিদরা। প্রথমে সবার মাঝে থেকেও নিজেকে আলাদা মনে হতে শুরু করে কিংবা মনে হয় বন্ধুরা দূরে ঠেলে দিয়েছে। তার পরে চালচলন ও প্রতিদিনের কাজে সেই ভয় ফুটে ওঠে। তাই সচেতন থেকে নিজেই বোঝার চেষ্টা করতে হয় আপনিও এই ফোমো-তে আক্রান্ত কিনা!
ফোমো কীভাবে তৈরি হয়?
প্রথমেই একটা কথা বুঝতে হবে ফোমো অন্য কেউ তৈরি করে না। এই ভয় নিজের মনেই তৈরি হয়। মানুষের মনে ভয় ও আতঙ্কের অনুভূতি তৈরি করে এমিগডালা নামক একটি গ্রন্থি। কোনো মজাদার বা গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয় থেকেই এই হারিয়ে যাওয়ার ভয় তৈরি হয়। এমিগডালা এই ভয়গুলিকে বেঁচে থাকার জন্য হুমকিতে পরিবর্তিত করে যা পরে দৈনন্দিন কাজের মধ্যে প্রকাশ পেতে থাকে। স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া ফোমো আরো বাড়িয়ে তোলে।
ফোমো-তে আক্রান্ত কীভাবে বুঝবেন?
সবসময় সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকটিভ থাকা এমনকী বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে বসেও বারবার ফোনের দিকে মন চলে যাওয়া ফোমোর লক্ষণ।
অন্যদের নকল করা, নিজের জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটি- সে সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সবকিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরাও এর অন্যতম লক্ষণ।
এর থেকে মুক্তির উপায়
ফোমো আসলে এক অনুভূতি যা বিভিন্ন চিন্তা করার জন্য তৈরি হয়, আর সেই চিন্তাগুলিকে বাড়িয়ে ভয়ের আকার দেয় এমিগডালা। তাই প্রথমেই করণীয় অহেতুক চিন্তা বাদ দেওয়া। টিনএজারদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেকটাই বেশি কারণ তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি অ্যাকটিভ থাকে। অন্যদের দেখে নিজেকে সেই জায়গায় বা তাদের একজন কল্পনা করলে ফোমো বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে নিজেই নিজেকে মান্যতা দিলে আলাদা হওয়ার ভয় অনেকটা কমে যায়। তবে শুধু টিনেজার নয় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও ফোমো দেখা যায়। সেক্ষেত্রে সমমনষ্ক বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিলে বা দরকারে মনোবিদদের সাহায্য নিতে পারেন।