নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানে অত্যাচারিত ‘সংখ্যালঘু’ হিন্দু সমাজ। ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হল হিন্দুদের দুই প্রাচীন মন্দির। হামলা চলল হিন্দুদের বাড়িতেও। মাত্র ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে কার্যত তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা।
পাকিস্তানের সংবাদ সংস্থা ‘দ্য ডন’এর খবর অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে সিন্ধ প্রদেশের করাচির সোলজার বাজার এলাকায় ১৫০ বছরের পুরনো একটি হিন্দু মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রাতের অন্ধকারে রীতিমতো পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে বুল্ডোজার দিয়ে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয় মারি দেবীর মন্দির। ভাঙা হয়নি কেবল মন্দিরের বাইরের দেওয়াল এবং প্রধান গেট। স্থানীয় অন্য একটি মন্দিরের পুরোহিত শ্রী রামনাথ মিশ্র জানান, ৩৬০০ থেকে ৪০০০ বর্গফুটের উপর তৈরি মন্দিরটি এলাকার সবথেকে পুরনো মন্দির। স্থানীয় হিন্দু মাদ্রাসি সম্প্রদায়ের দায়িত্বে ছিল মন্দিরটি। বেশকিছুদিন ধরে জমি ব্যবসায়ীদের নজরে ছিল মন্দিরটি।
তিনি আরও জানান, মন্দিরের জমি উপর শপিং প্লাজা বানানো নিয়ে ইমরান হাশমি এবং রেখা নামে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়। পাকিস্তানি মুদ্রায় ৭০ মিলিয়নে নাকি বিক্রিও হয়ে গিয়েছে জমিটি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য পাক হিন্দু কাউন্সিলের মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলি শাহ এবং সিন্ধ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেলের কাছে আবেদন জানিয়েছে হিন্দুরা। তবে হিন্দুদের সমস্ত অভিযোগ হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছেন করাচির মেয়র ব্যারিস্টার মুরতজা ওয়াহাব সিদ্দিকি। তাঁর দাবি, এলাকায় কোনও মন্দির নাকি ভাঙা হয়নি। দ্বিতীয় ঘটনাটিও ঘটেছে সিন্ধ প্রদেশে। রবিবার ভোররাতে প্রদেশের দক্ষিণে কাশমোর এলাকার একটি হিন্দু মন্দিরকে রকেট লঞ্চার দিয়ে ভেঙে দেয় একদল ডাকাত। সেইসঙ্গে, এলাকায় হিন্দুদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় তারা। যদিও ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আতঙ্কে এলাকার হিন্দুবাসীরা।
আরও পড়ুন: Sarbananda Sonowal: মমতাকে ধুয়ে দিলেন সর্বানন্দ সোনেওয়াল
স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্বিচারে গুলি চালায় হামলাকারীরা। সেই খবর পাওয়া মাত্রই এলাকায় উপস্থিত হয় কাশমোর-কান্ধকোটের এসএসপি ইরফান সাম্মোর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। ঘটনা প্রসঙ্গে এসএসপি জানান, বাগরি সম্প্রদায়ের লোকেরা মন্দিরটির দেখাশোনা করত। বছরে একবারই খোলা হত মন্দিরটি। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, “হামলার পর আততায়ীরা পালিয়ে যায়। তাদের খোঁজে গোটা এলাকায় অনুসন্ধান অভিযান শুরু করা হয়েছে”।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়। এর আগেও বহুবার হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে পাক দুষ্কৃতীরা। তবে ঘটনাগুলিকে তারা কোনওভাবেই সমর্থন করছে না বলেই জানিয়েছে পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন। বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে প্রদেশের স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছে বলে খবর।