নিউজ ডেস্ক: প্রায় দু’বছর পর দেখা হয়েছে তাঁদের। দীর্ঘ আলাপচারিতাই তো স্বাভাবিক! তবে রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এই দৃশ্য খানিক বেমানান নয় কী! ‘মহাজোট’এর বৈঠকের আগেই প্রায় ২০ মিনিট ধরে গল্প করতে দেখা গেল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়কে। নিজেদের বার্তালাপে দুই নেত্রী এতটাই মগ্ন ছিলেন যে পরবর্তী আলোচনার জন্যে অপেক্ষা করতে হল বাকি নেতাদের।
সোমবার নৈশভোজে সকলকে আমন্ত্রণ জানান কংগ্রেস নেত্রী। তবে তার আগে মঙ্গলবারের বৈঠকের নীতি নির্ধারণের জন্যে আলোচনায় বসেন বিরোধী নেতারা। বাকিদের আগেই আলোচনা সভায় পৌঁছে যান মমতা এবং সোনিয়া। হোটেলের হলে দাঁড়িয়েই শুরু হয় দু’জনের আলাপচারিতা। আলোচনা হয় বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নিয়ে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনী সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন বহু বাম-কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক। আর সে কথা মাথায় রেখে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি আগেই জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় ‘মমতা এবং সিপিএম’ কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, “বাম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে কিছু আঞ্চলিক দল একজোটে বিজেপি এবং তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করবে”। আর এখানেই ‘মহাজোট’এর ভবিষ্যত নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: Opposition Meeting: ফের রাজ্য বাম-কংগ্রেস কর্মীদের একসঙ্গে লড়াই করার আহ্বান জানালেন শুভেন্দু
‘মহাজোট’এর বৈঠকের ট্যাগলাইন ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড’। তবে এই মুহূর্তে বাংলা নিয়ে বহুমত রয়েছে বিরোধী শিবিরের অন্দরেই। আর তার নিরিখে এই ট্যাগলাইনটি কতটা প্রযোজ্য, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহানে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মমতার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা লালু প্রসাদ যাদব।
তাঁর কথায়, তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে একাধিকবার উগ্র সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকে। মহাজোটের জন্যে যা একাবারেই কাম্য নয়। তবে অবশ্য বাংলায় যতই আদায় কাঁচকলা সম্পর্ক হোক না কেন, জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপিকে হারানোই প্রধান লক্ষ্য কংগ্রেস-তৃণমূল-সিপিএম’র। সেকারণে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মতি জানিয়েছে তিন দলই।
শুধুমাত্র বাংলা নিয়েই নয়, কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স নিয়েও যথেষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে মহাজোটের অন্দরে। যার নিদর্শন পাওয়া গিয়েছিল পাটনার বৈঠকেই। অবশ্য বেঙ্গালুরুর বৈঠকের আগে আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে সেই বরফ গলে গিয়েছে। তবে সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সুতরাং সবমিলিয়ে মহাজোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে খানিক সন্দিহানে জাতীয় রাজনৈতিক মহল।