নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় পুরাণগুলি শুধুমাত্র ধর্মকেন্দ্রিক মনে করলে ভুল, ধর্মীয় ক্ষেত্রের মোড়কে সেগুলি আসলে প্রতিনিধিত্ব করেছে মানব-জীবনকেই। মানব জীবনের নিগূঢ় তত্ত্ব ও রহস্য এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় এক একটি পুরাণে। তেমনই একটি হল গরুড় পুরাণ। এই পুরাণে বিশদে মানুষের জন্ম-মৃত্যু, আত্মা-পরমাত্মা, ইহকাল-পরকাল নিয়ে অনেক জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া রয়েছে। তেমনই একটি প্রশ্ন রয়েছে মানুষের গড় আয়ু ক্রমশ কমে যাওয়ার কারণ কী?
পুরাণ মতে, সত্য যুগে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪০০, ত্রেতাতে ৩০০, দ্বাপরে ২০০ আর কলি অর্থাৎ বর্তমান সময় অনুসারে ১০০। কিন্তু তথ্য অনুযায়ী মানুষের বর্তমান গড় আয়ু মোটামুটি ৭২। তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। গরুড় পুরাণে এই আয়ু হ্রাস পাওয়ার কারণ হিসেবে ৫ টি কারণকে করা হয়েছে দায়ী:
১. দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা– ব্যস্ত জীবনে সঠিকভাবে খাওয়া ঘুম হয়ে ওঠে না এখনকার কর্পোরেট জগতে। রাতে দেরি করে শুলে প্রবণতা দেখা যায় দেরি করে ওঠার। আর গরুড় পুরাণ বলে, দেরিতে ঘুম থেকে উঠলে সকালের বিশুদ্ধ বাতাস শরীরে লাগে না, ফলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি হ্রাস পেয়ে আয়ু কমিয়ে দেয়।
২. বাসি মাংস ভক্ষণ– ফ্রিজে রাখা বাসি মাছ-মাংস বারে বারে গরম করে খাওয়া তো আজ খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু এই রকম বাসি মাংসে একাধিক বিষাক্ত ছত্রাক বাসা বাধে। আর দীর্ঘদিন ধরে এই ছত্রাক শরীরে প্রবেশ করতে করতে অসুস্থ করে দেয়।
৩. রাতে দই খাওয়া– এখনও বাড়ির গুরুজনেরা রাতে দই খেতে বারণ করেন। এটাও যুক্তিযুক্ত। গরুড় পুরাণ অনুযায়ী, রাতে দই খেলে শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক ফুসফুসজনিত রোগ দেখা যায়।
৪. শ্মশানের ধোঁয়ার সংস্পর্শ– শ্মশানে মৃতদেহ পোড়ানোর ধোঁয়াকে এড়িয়ে যাওয়ার নিদান দেওয়া হয়েছে এই পুরাণে। বলা হয়েছে, শ্মশানের ধোঁয়ায় একাধিক বিষাক্ত পদার্থ মিশে থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করলে শ্বাসকষ্ট বা হার্টের সমস্যা তৈরি করে।
৫. দিনের বেলায় সঙ্গম– দম্পতিদের জন্য কঠোরভাবে দিনের বেলা সহবাস নিষেধ করা হয়েছে গরুড় পুরাণে। আসলে দিনের বেলা কাজের সময়, শারীরিক শক্তি খরচ হয় যথেষ্ট। সঙ্গমে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিলে শরীর তা প্রতিহত করতে না পেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বরং সকালে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ ব্যায়াম করার নিদান রয়েছে।