নিউজ ডেস্ক: রুশ আক্রমণে কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে দেশ। কিন্তু তবুও রক্ষা নেই। এবার চূড়ান্ত খাদ্য সংকটের মুখে ইউক্রেন। কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনীয় বন্দরে হামলা চালাল রাশিয়া। টানা তিনদিনের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে ১৯ জন। যাদের মধ্যে ৫ জন শিশু রয়েছে।
রাষ্ট্রসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের ২৪ জুলাই একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় দু’দেশের মধ্যে। চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের বন্দরগুলির মাধ্যমে গোটা বিশ্বে শস্য রপ্তানিতে মঞ্জুরি দেয় মস্কো। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, সেই চুক্তি থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। সোমবার রাত থেকে দেশের দক্ষিণী বন্দরগুলির উপর এয়ার স্ট্রাইক শুরু করেছে মস্কো।
হামলায় সুপারসোনিক মিসাইল বহনকারী ৮টি এয়ারক্রাফট, অ্যান্টি-সিপ ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী বলে দাবি মন্ত্রকের। ওডেসার গভর্নর ওলেহ কিপার জানিয়েছেন, বুধবারের হামলায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। ধ্বংস হয়েছে ৬০ হাজার টন খাদ্যশস্য এবং গুদাম। অন্যদিকে, দক্ষিণাঞ্চলীয় গভর্নর ভিতালিয়ে কিম জানিয়েছেন, মাইকোলাইভে রুশ হামলার কারণে ভেঙে পড়েছে একাধিক বহুতল। ফলত নতুন করে ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে কিয়েভের প্রধান বন্দর এলাকাগুলিতে।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার মস্কো সাফ জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগরের ইউক্রেনীয় বন্দরে আসা সমস্ত জাহাজকে অস্ত্রবাহী বলে গণ্য করা হবে। উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুতিনের দেশ।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের অভাব দেখা দেয়। কারণ বিশ্বের একাধিক দেশে শস্য রপ্তানি করে কিয়েভ। ফলে ইউক্রেন থেকে রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বে। আবার ইউক্রেনের একাধিক গুদামে নষ্ট হবে শস্য। ফলে শস্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সমস্ত দিক পর্যবেক্ষণের পর বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। উচ্চপদস্থ কূটনীতিক জোসেফ বোরেল জানিয়েছেন, চুক্তি থেকে সরে গিয়ে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের সৃষ্টি করেছে ক্রেমলিন।
অন্যদিকে, চুক্তি অমান্য করায় যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় নাম রয়েছে পুতিনের। যেকোনও মুহূর্ত তাঁর গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। তাই পরিস্থিতির নিরিখে আসন্ন ব্রিকস্ সম্মেলন থেকে নিজেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। আর সেকথা ঘোষণা করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার তরফে।