নিউজ ডেস্ক: এই মুহূর্তে বিশ্বের তৃতীয় পেট্রোলিয়াম আমদানিকারক দেশ হলো ভারত। ভারতের বাজার ধরতে বরাবর মরিয়া তেল-রপ্তানিকারী দেশগুলি। বর্তমানে ভারতকে বর্বাধিক পরিমাণে তেল রপ্তানি করছে রাশিয়া। রাশিয়া ছাড়া সৌদি আরব আর ইরাকের থেকেও কিছু পরিমাণ তেল কেনে ভারত। এবার ভারতের পেট্রোলিয়াম বাজার ধরতে কূটনৈতিক বার্তা দিল ইরান। ইরানের সহকারী বিদেশমন্ত্রী একটি সাক্ষাৎকারে জানান,’এশিয়ায় কূটনৈতিকভাবে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম ভারত, যা তারা করছে না।’
এ বিষয়ে বলতে গিয়ে চিনের প্রশংসাও করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, আমেরিকার নিষেধের কারণে তাদের থেকে তেল কিনতে চায় না ভারত। কিন্তু সেই আমেরিকান প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই ইরানের থেকে তেল কিনে চলেছে চিন। সেই সঙ্গে সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের বিবাদ মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জিংপিং-এর দেশ। এক কথায়, চিনের প্রসঙ্গ এনে এশিয়ায় আমেরিকার প্রভাবমুক্ত থেকে কূটনৈতিক তাস খেলার পরামর্শ দিল ইরান ভারতকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে ভারতের ‘ইগো’কে আঘাত করে ভারতীয় বাজার পেতে এখন মরিয়া ইরান।
উল্লেখ্য, ক্রমবর্ধমান মন্দার ফলে একদিকে খাদ্য সঙ্কটে ইরানে, আবার তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারও কমছে দ্রুতগতিতে। এই অবস্থায় ইরান চাইছে ভারতের তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার ধরে অবস্থার উন্নতি করতে। তবে আমেরিকার সঙ্গে বিশেষ কূটনৈতিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দিতে ইরানের থেকে তেল-আমদানি করে না ভারত। তবে একথা সম্পূর্ণ ঠিক নয় যে ভারত আমেরিকার স্বার্থ দেখে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। আসল ব্যাপার হলো, ইরান যতদিন না পর্যন্ত ভারতকে তেল রপ্তানিতে এমন কোনও বিশেষ অফার না দেয়, যা তাদের অন্য কোনও দেশ দিচ্ছে না, ততদিন ইরানের থেকে তেল কিনে লাভ নেই ভারতের। যা ইতিমধ্যে দেখা গেছে রাশিয়ার ক্ষেত্রে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিকে ভারতকে আন্তর্জাতিক দামের চেয়েও অনেক কম দামে তেল রপ্তানি করে রাশিয়া, সেই সময় আমেরিকার নিষেধ সত্ত্বেও পুতিনের থেকে বড় মাত্রায় তেল কিনতে থাকে ভারত। বর্তমানে তেলের দাম রাশিয়া বাড়িয়ে দিলে আমদানির পরিমাণও ক্রমশ কমিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। এখন ইরান ভারতকে বিশেষ কোনও সুবিধা দিলে ভারত যে দেশের স্বার্থে তাদের থেকেও তেল আমদানি করতে রাজি থাকবে তা পরিষ্কার।