নিউজ ডেস্ক: বয়স যেন বাড়তেই
চায় না তার, তিনি আজও বাঙালির কাছে ‘ম্যাটিনি আইডল’। ভুবনভোলানো হাসিতে তার বয়সটা যেন
ঠিক যৌবনের গোড়াতেই আটকে গেছে। মহানায়ক হলেও তার চেহারায় যে মধ্যবিত্ত ছোঁয়া খুঁজে
পেয়েছিল আপামর বাঙালি, বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সেই ‘মধ্যবিত্ত আবেদন’-এর জোয়ারেই
কত কত মানুষের হৃদয় ভাসিয়েছেন তিনি। বাঙালির আড্ডা হোক বা বিতর্ক বা দ্বন্দ্ব ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের
মত উত্তম না সৌমিত্র এই তর্কও চলবে। আর এই মহানায়ককেই কিনা একটা গোটা রাত কাটাতে হয়েছিল
বাথরুমের মধ্যে! কিন্তু কেন? কার ভয়ে বাথরুমে লুকিয়েছিলেন মহানায়ক?
সুচিত্রা
সেনের সঙ্গে উত্তমকুমারের জুটিকে নিয়ে যতটা চর্চা হয়, তার সঙ্গে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের
সম্পর্ক নিয়ে অতটা কথাবার্তা শোনা যায় না। কিন্তু এই সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যেই
অমোঘ এক আকর্ষণের উৎস খুঁজে পেয়েছিলেন উত্তমকুমার। আদর করে ‘সাবু’ বলে ডাকতেন উত্তম।
‘ধন্যি মেয়ে’, ‘মৌচাক’, ‘দুই ভাই’, ‘নিশিপদ্ম’ ইত্যাদি ছবিতে উত্তমের সঙ্গে তার জুটি
আজও বাঙালির কাছে ছবির ফ্রেমে বন্দি। স্নেহ, প্রেম, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা সাবিত্রীর সঙ্গে
উত্তমের সম্পর্কের নিরিখের তল ছিল না! সম্পর্কের সংজ্ঞা ছিল না। এদিকে সাবিত্রী চিরকাল
ঘরোয়া, রান্না করতে ভালোবাসেন, বাবাকে প্রচণ্ড ভয় পান। আর তার দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাবার
ভয়ে কাঁপতেন স্বয়ং উত্তমকুমারও। বাড়ির কড়া নিয়ম ছিল রাত দশটার পর যেন কোনো পুরুষ তার
সঙ্গে দেখা করতে না আসেন। আর একদিন একপ্রকার অজান্তেই উত্তমকুমার এসে পড়েন সাবিত্রীর
বাড়িতে। ঘড়িতে তখন ইতিমধ্যেই দশটা বেজে পেরিয়ে গিয়েছে, সেটা খেয়ালই ছিল না। আর যখন
খেয়াল পড়ল, সাবুর বাবার ভয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না উত্তম। মহানায়কের তখন ছেড়ে
দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। বাড়িতে ঢুকে তো পড়েছেন, কিন্তু চট করে বেরোতে গেলেই ধরা
পড়ে যাবেন যে! গানের কলি ধার করে বলা যায়, তার অবস্থা তখন ‘ভয়েরই খাঁড়াতে হয়ে গেলাম
পাঁঠাবলি’।
আরও পড়ুন: Flurys: হেরিটেজের তকমা পেল পার্ক স্ট্রিটের ফ্লুরিস, স্বীকৃতি দিল ‘ইনটাক’
কিন্তু উপায়
কী! একটা কিছু বুদ্ধি বের করতে হবে! নাহলে সাবিত্রীর বাবার সামনে একবার পড়লে সাবু-উত্তম
দুজনেরই কপালে ঘোরতর দুঃখ! রাত ঠিক দশটায় নিজের বাড়ির গেটে তালা দিতেন সাবিত্রীর বাবা।
আর তার দাপটের সামনে কারো কথা বলার জো ছিল না। আর তাই বাবার ভয়ে সারারাত বাথরুমে বন্দি
হয়েই কাটালেন মহানায়ক। চাইলে সাবিত্রীর বাবার সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে যেতেই পারতেন, কিন্তু
তিনি নিজে যেহেতু যৌথ পরিবারের ছেলে তাই এই কড়া নিয়মনীতিগুলো বেশ ভালোই বুঝতেন। অনেক
পরে হাল আমলে টেলিভিশনের একটি রিয়েলিটি শো-তে এসে এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন সাবিত্রী।
নায়িকার বাথরুমে উত্তমের রাত্রিযাপন! মহানায়কও তাহলে ভয় পেতেন!