নিউজ ডেস্ক: মণিপুর হিংসার সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনও জড়িয়ে রয়েছে! এবার এমনই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং’এর বিরুদ্ধে সরব হলেন তাঁরই দলের বিধায়ক।
চূড়াচাঁদপুর জেলার সাইকত কেন্দ্রের উপজাতীক বিধায়ক পাওলিএনলাল হাওকিপের দাবি, রাজ্য সরকার জড়িয়ে রয়েছে বলেই তিন মাস ধরে চলা হিংসার ঘটনায় এখনও কোনও নিস্পত্তি হয়নি। প্রমাণ হিসেবে তাঁর দাবি, “জাতিগত এবং সম্প্রদায়গত ভাবে একটি হিংসার ঘটনার সূত্রপাত হয়। কিন্তু পরে সেই ঘটনা মাদক চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের যুদ্ধ বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি চাইলে এই ঘটনার সুরাহা করতে পারতেন”।
উল্লেখ্য, কুকি অধ্যুষিত জেলাগুলিতে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্যে মে মাসে মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন ১০ জন বিধায়ক। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাওকিপ। বিজেপির এই বিধায়ক নিজেও একজন কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। যদি তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিং। জানিয়েছিলেন, মণিপুরের অখণ্ডতা রক্ষা করতে পারবে তাঁর সরকার। যদিও বীরেন সিং’এর সরকার তা পারেনি বলেই অভিযোগ হাওকিপের।
নিজের সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন এই বিধায়কের অভিযোগ, “রাজ্যের বিভিন্ন বৈষম্যের থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনে নেমেছিল কুকি-জো সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু মেইতেইরা ভেবে নেয় কুকিরা বোধ হয় উপত্যকায় তারা জমি দখল করে বসবে”। সেইসঙ্গে বীরেন সিং’এর সরকারকে ‘পক্ষপাদদুষ্ট’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
মায়ানমার-মণিপুর সিমান্ত লাগোয়া ইম্ফল পার্বত্যাঞ্চলে মূলত বাস কুকি-জো সম্প্রদায়ের। জনজাতি সম্প্রদায় হওয়া সত্ত্বেও কোনও বিশেষ সুবিধা তারা পাননা বলে অভিযোগ। এদিকে, উপত্যকায় বসবাসকারী জনজাতি মেইতেইদের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারকে নির্দেশ দেয় মণিপুর হাইকোর্ট। আর তারপরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত। হাওকিপের অভিযোগ, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আস্থা ফেরাত পারতেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। কিন্তু তার বদলে মাদক চাষ এবং চোরাচালানের অভিযোগ এনে কুকি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছিল তাঁর সরকার।