নিউজ ডেস্ক: শ্রাবণের তৃতীয় সোমবারে বহু দূর দুরান্ত থেকে ভক্তরা এসে জল অর্পণ করতে এলেন এশিয়ার বৃহত্তম কষ্টিপাথরে শিবলিঙ্গ শিব নিবাসে। দূর দূরান্ত থেকে পুরুষ ও মহিলা ভক্তরা এসেছেন তাদের মনস্কামনা পূরণ করতে শিবনিবাস মন্দিরে জল ঢেলে। কিন্তু জানেন কি কেন এই মন্দির তৈরি করেছিলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়? জানা যায় মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময় তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগর থেকে এখানে সরিয়ে আনেন। শিবের ভক্ত কৃষ্ণ চন্দ্র তার আরাধ্যের নামে নামকরণ করেন শিবনিবাস। এখানে সুন্দর রাজপ্রাসাদ ও কয়েকটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তার মধ্যে এখন মাত্র তিনটি মন্দির অবশিষ্ট আছে। প্রতিটি মন্দিরের উচ্চতা ৬০ ফুট।
এই শিবনিবাসে তাঁর রাজধানী প্রতিষ্ঠার একটি কাহিনী আছে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নসরত খাঁ নামক এক দুর্ধর্ষ ডাকাতকে দমন করতে মাজদিয়ার কাছে এক গহন অরণ্যে উপস্থিত হন। ডাকাতকে দমন করে সেখানে তিনি একরাত অবস্থান করেন। পরদিন সকালবেলায় তিনি যখন নদীতীরে উপস্থিত হন তখন একটি রুইমাছ জল থেকে লাফিয়ে মহারাজের সামনে এসে পড়ে। আনুলিয়া নিবাসী কৃষ্ণরাম নামক মহারাজের এক আত্মীয় তখন মহারাজকে বলেন, ‘এ স্থান অতি রমণীয়, উপরন্তু রাজভোগ্য সামগ্রী নিজে থেকেই মহারাজের সামনে এসে হাজির হয়। তাই এই স্থানে মহারাজ বাস করলে মহারাজের নিশ্চয়ই ভাল হবে’। মহারাজও তখন বর্গীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই রকমই একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজছিলেন। স্থানটি মনোনীত হলে তিনি কঙ্কনাকারে নদীবেষ্টিত করে স্থানটি সুরক্ষিত করেন। এই শিবনিবাসেই মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র মহাসমারোহে অগ্নিহোত্র বাজপেয় যজ্ঞ সম্পন্ন করেন। এই উপলক্ষ্যে কাশী, কাঞ্চি প্রভৃতি স্থান থেকে সমাগত পণ্ডিত মণ্ডলী তাঁকে ‘অগ্নিহোত্রী বাজপেয়ী’ আখ্যা প্রদান করেন। সেই সময়ে শিবনিবাস কাশীতুল্য বলে পরিগণিত হত।
কৃষ্ণচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত শিবনিবাসের মন্দিরগুলি বাংলা মন্দিররীতিতে উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এখানকার প্রথম দেবালয়টি ‘রাজরাজেশ্বর’ শিবমন্দির নামে পরিচিত। সাধারণের কাছে যা ‘বুড়োশিবের মন্দির’ নামে অভিহিত। এই মন্দিরটি বাংলার প্রচলিত মন্দিররীতির কোন শ্রেণীতে পড়ে না। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর