নিউজ ডেস্ক: ‘ধরাধামে আসতে পারেন না ভগবান। তাই অন্য কারও মাধ্যমে নিজের ইচ্ছে পূরণ করেন তিনি। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব, ভগবানের সেই আশির্বাদের মতো’। বৃহস্পতিবার লোকসভায় ঠিক এই ভঙ্গিতে নিজের জবাবি ভাষণ শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের কটাক্ষ করে তাঁর একটাই বক্তব্য ‘অনাস্থা প্রস্তাব আমাদের কাছে সৌভাগ্যের প্রতীক’। ২৪’এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের এই পদক্ষেপের জন্যই গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করবে বিজেপি বলেও এদিন সাফ জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০১৮ সালে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের সম্মুখীন হন মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে জিতে যায় তারা। ঠিক তার পরেই ১৯’র লোকসভা নির্বাচনে তাৎপর্যপূর্ণভাবে পূর্বের তুলনায় অধীক আসনে সরকার গঠন করে বিজেপি। মোদীর দাবি, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও এর অন্যথা হবে না। আসলে ‘নো-কনফিডেন্স মোশন’ এনে নিজেদের ‘ফ্লোর টেস্ট’ করেছে বিরোধী শিবির বলেই এদিন জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনদিন ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বক্তব্য রাখেন বিরোধীরা। ট্রেজারি বেঞ্চে বসে মন দিয়ে তাঁদের সমস্ত বক্তব্য শোনেন শাসক পক্ষের সাংসদরা। কিন্তু এদিন প্রধানমন্ত্রীর ঘন্টা দুয়েকের বক্তব্যের মাঝপথেই ধৈর্য্য হারান বিরোধী সাংসদরা। এবং ওয়াক আউটের সেই পুরনো ভোঁতা হাতিয়ার ব্যবহার করেন তারা। সারা দেশ যখন মণিপুর ইস্যুতে মোদীর বক্তব্য শুনল ঠিক তখনই প্রশ্ন তোলার জন্য সভায় ছিলেন না কেউই।
এদিন অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কের শুরু থেকেই কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেন মোদী। জহরলাল নেহরু থেকে মনমোহন সিং পর্যন্ত প্রত্যেক কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীদের জমানার ‘ব্যর্থতার’ প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। জানান হ্যাল, এলআইসি সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দুর্নীতি করেছে কংগ্রেস সরকার। সংস্থার কর্মীদের বিপথে চালনা করা হয়েছিল বলেও এদিন অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এনডিএ সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক মহলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ভারত বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার মোদীর ভাষণে ছিল কটাক্ষ আর ব্যঙ্গ। আর সেকারণে বারবার হাসির রোল ওঠে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে। এমনকি, হাসতে না চেয়ে হালকা হাসি হাসি মুখে কয়েকবার দেখা গিয়েছে বিরোধী শিবিরের কয়েকজনকে। তবে তা নিয়ে কোনও ব্যঙ্গ করেননি বিজেপি পক্ষের কেউ। বরং, ‘খুল কর হাসিয়ে’ বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন তাঁরা। আর এরপরই অনাস্থা নিয়ে গত তিনদিনের আলোচনা সম্পর্কে মোদী বলেন, ‘বিপক্ষে ফিল্ডিং সেট করেছে, কিন্তু চার-ছয় মারছে ট্রেজারি বেঞ্চ’। এরপর ভাষণের শেষ অংশে ২০২৪’এর লোকসভা ভোটে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জয়ের হ্যাটট্রিক করবে বলেও দাবি করেন মোদী। সেই সঙ্গে ২০২৯’এ ফের অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্যে বিরোধীদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী।