নিউজ ডেস্ক: তিনি ভারতের প্রথম মহিলা মেগা তারকা! শ্রীদেবী, এই নামটাই যথেষ্ট ছিল দর্শকদের হলমুখী করার জন্য। পোস্টারে কিংবা ছবিতে শ্রীদেবীর নামের জেরেই সিনেমাহল হাউসফুল থাকত দিনের পর দিন। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে নিজের দক্ষতায় বলিউডে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। শুধু জায়গায়ই নয়, বলিউডে বিগত ১০০ বছরের ইতিহাসে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে সেরার শিরোপা জিতে নিয়েছিলেন শ্রীদেবী। সত্তর আশির দশকে তাঁর লাস্যময়ী আবেদনে কাত হয়ে যেত অনুরাগীরা। অথচ তাঁর মৃত্যুই নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। সোমবার ১৪ অগাস্ট সেই ড্রিম গার্লের জন্মদিন।
জন্মদিনের সকালে শ্রীদেবী-কন্যা জাহ্নবী কপুর তাঁকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট করেন। সাদা কালো একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে তরুণী শ্রীদেবী তাঁর মায়ের কোলে বসে আছেন। কোনো একটি ছবির শুটিং সেটে তোলা হয়েছিল সেই ছবিটি। জাহ্নবী সেই ছবির ক্যাপশনে লেখেন যে, ‘শুভ জন্মদিন মা। আমি জানি এটা তোমার প্রিয় জায়গাগুলির মধ্য়ে একটি। তোমার মা ও ফিল্মের সেট। আজ যখন আমি তোমার জন্মদিনে একটি সেটে আছি, মনে হচ্ছে আরো কিছুদিন যদি তোমায় পেতাম। যাতে আমরা সবাইকে বোঝাতে পারতাম যে এটা আসলে তোমার ৩৫তম জন্মদিন, ৬০তম নয়। আমার প্রতিটি চেষ্টায় যাতে তুমি বলতে পারতে আমি নিজের সেরাটা দিচ্ছি কিনা? আর আমি তোমার চোখে দেখতে পারতাম তুমি আমাকে নিয়ে গর্বিত।’ জাহ্নবী আরো লেখেন যে, শ্রীদেবীই তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। মায়ের পছন্দের খাবার মনে রেখে জাহ্নবী বলেন যে, ‘আশা করি তুমি আজ প্রচুর পায়েসম, আইসক্রিম এবং ক্যারামেল কাস্টার্ড খাচ্ছো।’
শ্রীদেবী অভিনয় জগতে আসার আগে বলিউডে রাজ করেছিলেন তাবড় তাবড় অভিনেত্রীরা। মধুবালা, রেখা, হেমা মালিনী, বৈজন্তীমালার মতো প্রথম সারির নায়িকারা ছিলেন সেই তালিকায়। কিন্তু সারা ঊারতে তাঁর মতো স্টারডম আর কোনো অভিনেত্রীরই ছিল না। তাঁর রূপের জাদু ও নাচের সময় মুখের এক্সপ্রেশনের জন্য বহুল পরিচিত ছিলেন তিনি। তবে তাঁর অভিনয়কে ছাপিয়ে চর্চায় ছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। আশির দশকের শেষের দিকে মিঠুনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। কানাঘুষোয় শোনা গিয়েছিল চুপিসারে বিয়েও সেরে ফেলেছিলেন তাঁরা। যদিও পরে একথা অস্বীকার করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে প্রযোজক বনি কপুরকে বিয়ে করেন তিনি। দুই মেয়ে জাহ্নবী ও খুশি কপুরকে নিয়ে সংসারী হয়েছিলেন তিনি।
বিরতি নিয়েছিলেন বড় পর্দা থেকেও। দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন। পরে বলিউডে কামব্যাক করেন ‘ইংলিশ-ভিংলিশ’ ছবি দিয়ে। প্রশ্ন ধেয়ে আসে আদৌ কি সেই স্টারডম আর আছে? কে দেখবে তাঁকে? তবে সমালোচনাকে পিছনে ফেলে ফের বক্স অফিস হিট হয় সেই ছবি, আসে অনেকগুলি পুরস্কারও। এর পরে আরো একবার মন জয় করে ‘মম’ সিনেমার মাধ্যমে। মেয়েকে ন্যায় দিতে খুন করতে পিছপা হননি তিনি। কিন্তু বাস্তবে নিজের মেয়ের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি এই বলি ডিভা। মেয়ে জাহ্নবীর রুপোলি পর্দায় অভিষেকের আগেই দুবাইয়ের এক বিলাসবহুল হোটেলের বাথটাবে ডুবে মৃত্যু হয় তাঁর।