নিউজ ডেস্ক: চলে গেলেন কলকাতা ফুটবলের বড়ে মিঞা। মহম্মদ হাবিবকে সবাই ডাকতো এ নামেই। স্বাধীনতা দিবসের দিনে তিনি মারা গেলেন। হায়দরাবাদে নিজের বাড়িতে। ৭৯ বছর বয়সে তাঁকে চলে যেত হল বার্ধক্যজনিত রোগে। তার আগে পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্নানু রোগের নানা সমস্যা ছিল। শেষের দিকে ভুলে যেতেন সবকিছুই। হায়দরাবাদ নিজের জন্মস্থান হলে হাবিবের পরিচিতি ছিল এই বাংলাতে। অত্যন্ত সফল ফুটবলার হিসেবে। তিন প্রধানেই খেলেছেন দাপটের সঙ্গে। এখানেই শেষ নয়, কিছু না হলে প্রায় ১৭ বছর খেলেছেন বাংলায়। নিজের ১৭ বছর বয়সে কলকাতায় খেলতে এসেছিলেন হাবিব। কাকার হাত ধরে। শুরুতেই নাম লিখিয়েছিলেন লাল-হলুদে। সালটা ১৯৬৬।
চার বছরের মধ্যেই খেলেছেন ভারতীয় টিমে। ১৯৭০ সালে এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জজয়ী জাতীয় টিমের সদস্য ছিলেন তিনি। খেলেছেন বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফিতে। কলকাতায় তিন প্রধানের হয়ে খেলেছেন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে। পাক্কা টিম ম্যান হিসেবে তিনি ছিলেন বিখ্যাত। বড় ম্যাচে তাঁর ভুমিকা ছিল বড় দাদার মতো। ভাই আকবরকে নিয়ে এসেছিলেন কলকাতায়। মোহনবাগানের জার্সি গায়ে তাঁর ১৭ সেকেন্ডের গোলের রেকর্ড আজও অক্ষত।
আরও পড়ুন: Indian Football: ফের বিদেশে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভুদের খেলানোর চেষ্টা দেশের জার্সিতে
খেলা ছাড়ার পর কোচিংয়ে এসেছেন। বড়ে মিঞা থেকে হাবিব স্যর হয়েছেন। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নিয়ে তৈরি করেছেন একঝাঁক তারকা। দীপেন্দু বিশ্বাস, শঙ্করলাল চক্রবর্তী, কল্যাণ চৌবে সহ বহু তারকা ফুটবলার তৈরি হয়েছেন টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমিতে তাঁরই হাতে। সেই কোচিংয়ের টানে তিনি প্রথমে মোহনবাগানে, তারপরে মহামেডানে কোচিং করেছেন।
কলকাতায় তাঁর কোনও ঠিকানা ছিল না। ফুটবলার জীবনে টিমের মেসে থাকতেন। কোচিং জীবনেও ফুটবলারদের সঙ্গে দিন-রাত কাটিয়েছেন। কঠোর শূঙ্খলার মধ্যে তাঁর জীবন কেটেছে। ফুটবল কেরিয়ারে আগলে রাখতেন জুনিয়রদের। মেসে নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থাকতেন তিনি। সময় মেনে সকলকে চলতে হতো। মেসি ঢোকার শেষ সময় তিনি বেঁধে দিতেন। লাঞ্চ এবং ডিনারের নির্দিষ্ট সময় তাঁর মতোই করে চলতে হতো। কেউ কোনওদিন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখিনি। কলকাতা ফুটবল ময়দানে হাবিবের নাম উঠলেই মাথা নত হয়ে যায় ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু তাঁর শেষ বিদায়ে সঙ্গী থাকতে পারল না শহর কলকাতা।