নিউজ ডেস্ক: যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায়
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এল
হাড় হিম করা তথ্য। বেশ কয়েকজন পড়ুয়ার জবানবন্দিতে র্যাগিংএর
তথ্যই উঠে আসছে। অন্যদিকে পুলিশের তদন্তে উঠে আসছে ডিজিটাল তোলাবাজির তত্ত্ব।
জানা গেছে কমিটির সদস্যদের সামনে একাধিক পড়ুয়া
জবানবন্দিতে বলেছেন সেদিন মানসিক ও শারীরিক দুভাবেই ভয়ঙ্কর
নিগ্রহ করা হয়েছিল প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে। সেদিন তাকে বিবস্ত্র হতে বাধ্য করা হয়েছিল বলে
অভিযোগ। হস্টেলের বারান্দায় তখন তার
পরনে ছিল বারমুডা ও গেঞ্জি। ওই ছাত্রকে উত্যক্ত করতে অশ্লীল আওয়াজ বের করা হচ্ছিল। তাকে সেই আওয়াজ অনুকরণ করতে বলা হচ্ছিল। এরপর ঐ ছাত্রের শরীরে কোন পোশাক দেখা যায়নি।
একজন পড়ুয়া নাকি তদন্ত কমিটির সামনে জানিয়েছেন তাকে এতটাই
উত্যক্ত করা হয়েছিল যে সে নিজেই তার জামা কাপড় খুলে ফেলতে
বাধ্য হয়।
তদন্ত
কমিটির সামনে আর এক সিনিয়র আবাসিক জানিয়েছেন ওই
ছাত্র এতটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল যে নগ্ন অবস্থায় হস্টেলের সামনে দৌড়াদৌড়ি
করতে শুরু করে। সেই অবস্থায় তার গোপনাঙ্গ সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে হাত দেওয়া হচ্ছিল। এরপরেই সে ছাদের দিকে দৌড়ে
যায়। এবং তাকে পড়ে যেতে দেখেন বেশ
কয়েকজন আবাসিক। তখনও তার পরনে কিছু ছিল না।
এদিকে যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনিয়ে
গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২। ধৃতরা হল নাসিম আক্তার,
হিমাংশু কর্মকার ও সত্যব্রত রায়। অভিযুক্তরা সৌরভ চৌধুরীর খুব কাছের বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে নাসিম ও হিমাংশু প্রাক্তনী বলে জানা গেছে।
শুক্রবার রাতে এক ধৃতকে যখন প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছিল তখন সে
সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার দিকে অশ্লীল ভঙ্গিতে মধ্যমা দেখায়। আরও
জানা গেছে প্রাক্তনী এবং সিনিয়রদের একটা বড় অংশ তোলাবাজিতেও লিপ্ত
ছিল। তদন্তকারীরা জেরায় জানতে পেরেছেন হস্টেলের নবাগত ছাত্রদের কাছ থেকে ডিজিটাল কায়দায় তোলাবাজি করা হত। সিনিয়রদের খাবার ও মদের টাকা অনলাইনে মেটাতে বাধ্য করা হত প্রথম বর্ষের
নবাগতদের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের প্রথম
বর্ষের ছাত্রদের কাছ থেকে তোলাবাজি করত সৌরভ চৌধুরী ও
তার সাঙ্গপাঙ্গরা। প্রথমে নবাগতদের আর্থিক সামর্থ্য বুঝে নিত
অভিযুক্তরা। এরপর সিনিয়রদের জন্য আনা খাবার ও মদের বিল
অনলাইনে মেটাতে বাধ্য করা হত নবাগতদের।
প্রসঙ্গত যাদবপুরের ঘটনায় এদিন বিজেপির রাজ্য
সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষ কেন এতদিন ইউজিসির গাইডলাইন লাগু করেনি। গাইডলাইন লাগু করলেই র্যাগিং
সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন আগেই সিসিটিভি লাগানোর
কথা ছিল কিন্তু রাজনৈতিক চাপে পড়ে সিসিটিভি লাগানো যায়নি’।