নিউজ ডেস্ক: ইউরোপের উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ জয় করলেন এক বাঙালি। রাশিয়াতে অবস্থিত ইউরোপের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস। উচ্চতা ৫৬৪২ মিটার। রবিবার ভারতীয় সময় সকাল নটা নাগাদ এই শৃঙ্গে পা রাখেন আউসগ্রামের অমরপুরের বাসিন্দা ফাল্গুনী দে। দক্ষিণ রাশিয়ার ককেশাস পর্বতমালার এই শৃঙ্গে পৌঁছে দেশের জাতীয় পতাকা তুলে ধরেন তিনি। এরই সঙ্গে ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ রবীন্দ্রসংগীতটি গেয়েছেন বলেও জানান। পেশায় ভূগোলের শিক্ষক ফাল্গুনী দে। বাগবাজার উইমেন্স কলেজে শিক্ষকতা করেন তিনি।
ছোটবেলায় বইয়ের পাতা থেকে পাহাড়ে প্রতি আকর্ষণ জন্মায় তার। পড়াশোনা করেছিলেন আউশগ্রামের আদরিয়া দিবাকর উচ্চ বিদ্যালয়। পাহাড়ের প্রতি সেই অমোঘ আকর্ষণ থেকেই ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। পরবর্তীকালে পেশাগত জীবনেও ভূগোলের চর্চা থেকেই যায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি পাহাড় চড়ার নেশাও রয়েছে তাঁর। আর তাই বারে বারে ছুটে গিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, উত্তরাখন্ড, হিমাচল প্রদেশের বহু দূর্গম এলাকায়। সিকিমেরও বিভিন্ন পার্বত্য অঞ্চলে ট্রেকিং করেছেন তিনি।
গত বছর ফাল্গুনী জয় করেছিলেন আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো। এছাড়াও লাদাখের স্টক কাংরি, গোলাপ কাংড়ি, হিমাচলের কানামো, সিকিমের গোয়েচে লা ভি ওয়ান, উত্তরাখণ্ডের ফাচুকান্দি পাসের মত শৃঙ্গ জয়ের তালিকা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ১৩ই আগস্ট কলকাতা থেকে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। মস্কো পৌঁছে সেখান থেকে মাকালু এক্সট্রিম নামে একটি সংস্থার সঙ্গে পর্বত অভিযান শুরু করেন। তিনি বলেন ছোট থেকে অভিযানের গল্প শুনে শুনেই পাহাড়ের চড়ার নেশা জাগে ফাল্গুনীর। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পাহাড়েও হেঁটেছেন তিনি। এমনকি ২০১৪ থেকে টানা হিমালয় যাচ্ছেন ফাল্গুনী।
মাউন্ট এলব্রস অভিযান সফল হতে ভীষণ আনন্দিত তিনি। যদিও এই অভিযান সহজ ছিল না। তার প্রধান কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। পাহাড় চড়া শুরু করার আগে তিন দিন বেস ক্যাম্পে কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। এরপর টানা ১১ ঘন্টা মাউন্ট এলব্রুশে আরোহণ করেন তিনি। পর্বতের আবহাওয়া অনুকূল ছিল না, তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ২০ ডিগ্রি এবং হাওয়ার বেগ ছিল ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার যা পর্বতারোহীদের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের। ফাল্গুনী দে আরও বলেন জি ২০-তে ভারতের নেতৃত্বকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরাই এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল।