নিউজ ডেস্ক: শিলিগুড়ি সাফারি পার্কে দুই বাঘ
শিশুর মৃত্যু ঘিরে সিদ্ধান্ত বন দফতর। সমস্ত
চিড়িয়াখানায় বাঘ-ভাল্লুকের মতো স্তন্যপায়ীর এনক্লোজারের ভিতরে সিসিটিভি বসানো
হবে। দর্শক না থাকলে অবসর সময় বিশেষ করে রাতে এনক্লোজারের ভিতর পশুদের আচার-আচরণ
কেমন, সেসব বুঝতেই এই সিদ্ধান্ত। সদ্যোজাতের ক্ষেত্রে অনেক সময় মায়ের শরীর দুর্বল থাকে। শিশুর দেখভাল ঠিকমতো করতে
পারে না। অনেক সময় মা নিজেই তাদের সন্তানদের মধ্যে কাকে
বিশেষ নজর দেবে তা বেছে নেয়। এসব ক্ষেত্রে অন্য শিশুটি দুর্বল হয়ে মারা যায়।
বন দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির সাফারি পার্কের প্রথম বাঘ শিশুটির মৃত্যু হয় এভাবেই। এমন পরিস্থিতি আগে থেকে আঁচ করতেই এনক্লোজারে সিসিটিভি বসানোর
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাফারি পার্কের বাঘ কিক্কা সাদা চামড়ার। তবে
তার দু’টি শিশুই হয়েছিল হলদে ডোরাকাটা। একটি পূর্ণবয়স্ক হলদে ডোরাকাটার সঙ্গে
মিলনেই তাদের অমন সন্তান। শিশু দু’টির মৃত্যুর প্রধান
কারণ হিসাবে অসুস্থতাই জানানো হয়েছে। তবে তার সূত্রপাত তাদের মায়ের
থেকেই বলে জানাচ্ছে বন দফতর। জানা গিয়েছে, কিক্কার শরীরে
টিবি বাসা বেঁধেছে। পিছনের দুই পায়ে জন্মগত সমস্যা। উল্টোদিকে ভাঁজ হয়। তাতে প্রথম থেকেই কোমরের নিচের অংশে জোর কম। এই পরিস্থিতিতে তার
চিকিৎসা করতে গিয়ে কিছু কড়া ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়েছিল। তাতে প্রাথমিক লাভ হলেও হাঁটুর ক্ষয় বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে তুলনামূলক কম বয়সে
তার সন্তানধারণ এবং দুই শিশুর জন্ম। স্বাভাবিকভাবেই অসুস্থ শরীর খুব বেশি ধকল সইতে
পারেনি। যার প্রত্যক্ষ প্রভাবে শিশুদের স্তনপানেও সমস্যা হয়। যে শিশুটি প্রথম
মারা যায়, সেটি একেবারেই মায়ের যত্ন পায়নি। দ্বিতীয় শিশুটির মৃত্যুর কারণও মর্মান্তিক। কিক্কা দ্বিতীয় শিশুটিকে এক পাশে রেখে উঠে দাঁড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু শরীরের অবস্থার জন্য তা সম্ভব না হওয়ায় শিশুটির
উপরই ওই শরীর নিয়ে পড়ে যায় বলে খবর।
এই মুহূর্তে সাফারি পার্কে আরও ৪টি প্রায়
পূর্ণবয়স্ক বাঘ রয়েছে। আরও অন্তত ১২টি বাঘ আনার কথা। তার মধ্যে ৮টি আসার কথা মধ্যপ্রদেশ থেকে। বাকি ৪টি ঝাড়খন্ড থেকে। এ ছাড়া ৪টি
সাইবেরিয়ান বাঘ আনার কথা রয়েছে দার্জিলিং চিড়িয়াখানার জন্য। এদের কথা মাথায়
রেখেই নজরদারি বাড়াতে, বিশেষ করে রাতে নজর বাড়াতে
এনক্লোজারের বাইরে উল্টোদিকে নাইটভিশন সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।