নিউজ ডেস্ক: বসার ঘরের যেন বড়ই অভাব। তাই চেয়ার হারানোর পর বসার জায়গা নিয়ে
বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে গেলেন জনপ্রতিনিধি-আমলা। পুরুলিয়ার ঝালদা এক পঞ্চায়েত সমিতির
প্রাক্তন সহ-সভাপতি তথা এখনও পর্যন্ত সাধারণ সদস্য হয়ে থাকা শেখ সুলেমান ও বিডিও
রাজকুমার বিশ্বাসের মধ্যে বৃহস্পতিবার ঝামেলা বেঁধে যায় ব্লক প্রশাসনিক ভবনেই। পরিস্থিতি
এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে প্রাক্তন সহ- সভাপতির বিরুদ্ধে অফিস ঘর জোর করে দখল করে
রাখার অভিযোগ তোলেন বিডিও। ওই প্রাক্তন সহ-সভাপতি তার অফিস ঘরে ব্যক্তিগত ভাবে
কেনা আলমারি, টিভি ও অন্যান্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে
এই তত্ত্ব খাড়া করে ঘর ছাড়ার জন্য কিছু সময় চেয়ে বিডিওকে লিখিতভাবে
জানিয়েছিলেন। তারপরেও বৃহস্পতিবার সেই অফিস ঘরে রঙ শুরু হওয়াই চটে লাল হয়ে যান
প্রাক্তন সহ-সভাপতি।
জানা গেছে বিডিওকে হুমকি দেন সুলেমান মহাশয়। ১৪ই আগস্ট এই পঞ্চায়েত সমিতির
বোর্ড গঠনের পর নতুন সভাপতি, সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
কিন্তু এখনও স্থায়ী ভাবে বসার জায়গা পাননি সভাপতি সারথি মুড়া ও সহ-সভাপতি
শক্তিপদ মাহাতো। এদিকে আজ শুক্রবার এই পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠন।
ঝালদা এক ব্লক কার্যালয় ও পঞ্চায়েত সমিতির
ভবন আর পাঁচটা ব্লক অফিসের মত বড় জায়গায় বা একেবারে ঝাঁ চকচকে নয়। বাস্তবেই জায়গার অভাব রয়েছে। তবে এর মধ্যেই পাঁচ বছরে বেশি সময় আগে ‘অ্যাডমেনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিং‘
হিসাবে একটি ভবন তৈরি হয়। সেখানেই বিডিও ও জয়েন্ট বিডিওর বসার
জায়গা ঠিক করা হয়। কিন্তু ঝালদা এক ব্লকের বিডিও রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, “যে ঘর আমার অফিস কক্ষ হিসেবে ঠিক করা হয়েছিল সেখানে প্রাক্তন সহ-সভাপতি
জোর করে দখল করে রাখেন। ফলে আমাকে অন্যত্র অফিস ঘর করতে হয়। বেশ কিছুদিন হল এই
সমিতির নতুন বোর্ড গঠন হয়ে গিয়েছে। ফলে এবার ঘর ছাড়তেই হবে। প্রাক্তন সহ-সভাপতি
ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের যে অজুহাত খাড়া করেছেন তা ঠিক নয়। ওই ঘরের আলমারি, টিভি সবই সরকারি অর্থে কেনা”।
বিডিওর
পাল্টা শেখ সুলেমান বলেন, “ওই কক্ষে আমার
ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রয়েছে। এগুলো আমি বিডিওকে চলতি মাসের ২১ তারিখ লিখিত আকারে জানিয়ে বলেছি আমাকে কয়েকদিন
সময় দেওয়া হোক ওই ঘর ছাড়ার জন্য। কিন্তু তিনি সেই সব কোন কথা না শুনেই চেয়ার
টেবিল ঘর থেকে বার করে রঙ করতে শুরু করেছেন। আমার প্রয়োজনীয় নথিপত্র হারিয়ে গেলে
বা নষ্ট হলে এর দায় কে নেবেন? এদিন আমি বিডিওকে সেটাই
বলেছি। “
২০১৩ সালের পঞ্চায়েতের
সময় থেকেই তৎকালীন বিডিও পূর্ণদেব মালাকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের প্রোগ্রাম
অফিসারের ঘরে তাঁর কার্যালয় চালান। তিনি বদলি হয়ে যাওয়ার পর পরের বিডিও নির্মিতা
সাহাও সেখানেই বসেন। সেখানেই বসছেন বর্তমান বিডিও রাজকুমার বিশ্বাস। ২০১৮ সালের
বোর্ডের প্রাক্তন সহ-সভাপতি শেখ সুলেমান ও প্রাক্তন সভাপতি বিনা মাহাতো প্রশাসনিক
ভবনের ঘরে বসছেন। বিডিও বলেন, ” জয়েন্ট বিডিওর ঘরে প্রাক্তন সভাপতি এতদিন বসে এসেছিলেন। জয়েন্ট
বিডিও এ বিষয়ে কোনো আপত্তি তোলেন নি। ” কিন্তু প্রশ্ন সভাপতি ও সহ-সভাপতি
কোন ঘরে বসে তাদের অফিস চালাবেন? বিডিও বলেন, “এখনই ঠিক বুঝতে পারছি না”।