নিউজ ডেস্ক: রবিবার দত্তপুকুরের একটি বাজি
গোডাউনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৯ জনের। এই ঘটনার তদন্তে নামল এন আই এ। এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার
আধিকারিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বেআইনি
বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক
তরজা। সোমবার অমিত শাহকে চিঠি লিখে এন আই এ তদন্তের দাবি জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি
সুকান্ত মজুমদার। সরকারকে কটাক্ষ করে দত্তপুকুর বিষ্ফোরণ কাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“ টাকা দিলে এ রাজ্যে পারমাণবিক চুল্লি বানানো যাবে, বোমা কারখানা কোন ছাড়। বারুদের
স্তুপের ঊপদ দাঁড়িয়ে আছে বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী কি এই রাজ্যকে শ্মশানে পরিণত করতে চাইছেন।
প্রশাসন বলে কিছু নেই এখানে। এন আই এ তদন্ত করলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে”।
রবিবার থেকেই এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকটি নাম উঠে আসছে। জানা গেছে যে বাড়িতে
বিস্ফোরণ হয় সেটি শামসুল আলী নামে একজন স্থানীয় তৃণমূল
কর্মীর। এমনটাই দাবি করেছে স্থানীয়রা। এই
ঘটনায় আরেক অভিয়ুক্ত জেরাত আলীর নাম উঠে এসেছে। এন আই এ’র নজরে রয়েছে জেরাত আলী। তিনি
বোমা বানাতে ওস্তাদ বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আতসবাজি ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সম্পাদক বাবলা
রায়ের দাবি ঘটনাস্থল থেকে বোমা বানানোর মশলা উদ্ধার হয়েছে। তার দাবি, “ ঘটনাস্থল থেকে
পোটাশিয়াম ক্লোরাইড উদ্ধার হয়েছে যা বাজি বানাতে কাজে লাগে না। বরং বোমা বানাতে ব্যবহার
হয়”।
এই ঘটনায় ওই এলাকায়
রাতভর এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। শরীফ আলী নামে একজন
গ্রেফতার ও বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ
করা হয়। এই ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভারতীয়
দণ্ডবিধির ২৮৬, ৩০৪, ৩০৮,
৩৪ ও বিস্ফোরক আইন ও দমকল লাইনের ২৪/২৬ ধারায়
মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বেআইনি বাজি কারখানায় কারা যুক্ত তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
গোটা রাজ্যেই বেআইনি
কারখানা চলছে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারীর। দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের
ঘটনায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “মে মাসে পূর্ব
মেদিনীপুর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী
বাজি হাব তৈরি করার কথা বলেছিলেন।
কিন্তু তারপরেও বাজি হাবের কাজ একচুল এগোয়নি। মুখ্যমন্ত্রী চোরদের বাঁচাতে এবং বিরোধী দলকে শায়েস্তা করতে ব্যস্ত।
রাজ্যকে কপালের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। ভানু বাগের বাড়ি গিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু
সবই ভাওতা প্রমাণিত হয়েছে”।
প্রসঙ্গত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে
বেআইনি বাজির কারখানা। পূর্ব
মেদিনীপুরের এগরা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা নুঙ্গি
ও উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানা এলাকার নীলগঞ্জ এলাকায় কয়েকশো পরিবার বেআইনি বাজি
তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। প্রশাসন সবকিছু জেনেও চুপ
রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অন্যদিকে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস রবিবার রাতে দিল্লি থেকে ফিরে তড়িঘড়ি এয়ারপোর্ট থেকে সোজা রওনা দেন
দত্তপুকুরের উদ্দেশ্যে। বিস্ফোরণের জায়গা তিনি ঘুরে দেখেন। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। স্থানীয়রা
তাকে অভিযোগ জানান দীর্ঘদিন ধরে নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না
করে বাজি কারখানা ও বাজির গোডাউন চলছিল ওই জায়গায়। এছাড়াও ওই এলাকায় বহু বেআইনি বাজির কারখানা ও
বাজির গোডাউন রয়েছে ওই এলাকায়।