নিউজ ডেস্ক: সীমান্ত সমস্যা মেটেনি এখনও। অথচ তার মধ্যে বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ আরও জটিল করে তুলেছে চিন। এবার তাতে আরও একমাত্রা যোগ হল সদ্য প্রকাশিত একটি স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে। ম্যাক্সার টেকনোলজির প্রকাশিত নয়া উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, উত্তর লাদাখের দেপসাং ভূমির ৬০ কিলোমিটার দূরে বড় সুড়ঙ্গ এবং বেশ কয়েকটি বাঙ্কার তৈরি করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি(PLA)। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পূর্বাংশে ৬২-এর যুদ্ধে জবর দখল করা ভারতের আকসাই চিনের মধ্যে এই নির্মাণ করেছে বেজিং। স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েনের জন্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে সংঘাতের মোকাবিলা করার জন্যে ভূর্গভস্থ বাঙ্কারে সেনার পাশাপাশি বিশাল সংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ রসদ মজুত রাখার ব্যবস্থা করছে চিন। ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর এবং ২০২৩ সালের ১৮ অগাস্ট তোলা দুটি চিত্র বিশ্লেষণ করে এমনটাই ধারণা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বলে খবর। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে প্যাংগং হ্রদের উত্তর এবং দক্ষিণে লালফৌজের সেতু নির্মাণের প্রমাণ পাওয়া যায় উপগ্রহচিত্রে। এবার নিয়ন্ত্রণরেখার এতও কাছে ঘাঁটি তৈরি করে নিজের আগ্রাসনী চরিত্রের পরিচয় দিয়েছে বেজিং, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন: Indian China Relation: চিনা মানচিত্রে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, সীমান্তে আদৌ কী শান্তি চায় চিন?
২০২০ সালের গালওয়ান প্রদেশের ঘটনার পর সীমান্তে নিজেদের শক্তি অনেকাংশে বাড়িয়েছে ভারত। আক্রমণাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র মোতায়েন করার পাশাপাশি যুদ্ধবিমানের ঘাঁটি তৈরি করেছে ভারত। নিউস্পেস রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজির কর্ণধার সমির জোশীর মতে, ভারতীয় সেনার এই তৎপরতা দেখে ভয় পেয়েছে চিন। অন্যদিকে ফোর্স অ্যানালিসিস(Force Analysis)-এর প্রধান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক সিম ট্যাকের(Sim Tack) মতে, ভারতের সম্ভাব্য আক্রমণ রুখতে লাদাখে তার শক্তি আরও বাড়াচ্ছে চিন, তা স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের এপ্রিলে দেমচক, দেপসাং, গালওয়ান, গোগরার পাশাপাশি প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার এরিয়া ৮-এর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে চিনা ফৌজ। রীতিমতো চোরের মতো চলে এসেছিল ফিঙ্গার এরিয়া ৪-এর কাছে। এরপর জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর পরাজয় স্বীকার করে চিন। নতুন করে শুরু হয় দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা। এরই মধ্যে প্যাংগং-এর দক্ষিণে হেলমেট টপ থেকে রেচিন লা-র বেশকিছু এলাকায় দখল নেয় ভারতীয় সেনার ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’। ফলে এবারও তার অন্যথা হবে না, তা স্পষ্ট।