নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত এক গানের ব্যান্ডের সাথে যোগ দিতে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল তিন স্কুল পড়ুয়া। চোখে মুখে একরাশ স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু বাড়ি থেকে পালিয়ে মুম্বই যাওয়ার পথেই হাওড়ায় পুলিশের জালে মুর্শিদাবাদের তিন ছাত্রী।
জানা গেছে, মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর এলাকার দুই নবম শ্রেণী ও এক সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকালে বাড়ি থেকে কিছু টাকাপয়সা ও জামাকাপড় নিয়ে বাড়ির নজর এড়িয়ে পালিয়ে আসে। প্রথমে ট্রেন ধরে শিয়ালদহে আসে তারা। সেখান থেকে ট্যাক্সিতে চলে আসে সল্টলেক। সেখানে কোন হোটেল না পেয়ে সেখান থেকে আবার ফিরে আসে শিয়ালদহ স্টেশনে। এদিকে, মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশও ততক্ষণে তিন স্কুল ছাত্রীর খোঁজে তল্লাশিতে নামে। তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদ পুলিশ সাহায্য নেয় হাওড়া সিটি পুলিশের। হাওড়া সিটি পুলিশের সাঁতরাগাছি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মৃণাল সিনহা এগিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন মুর্শিদাবাদে কাজের করার সুবাদে হিউম্যান ট্র্যাফিকিংয়ের উপর কাজ করা মৃনালবাবু ছাত্রীদের একজনের কাছে থাকা মোবাইল ট্র্যাক করতে শুরু করেন।
হাওড়া থেকে শিয়ালদহ হয়ে সল্টলেক পর্যন্ত পুলিশের টিম ছুটে বেড়ায়। ইতিমধ্যেই মোবাইল ট্র্যাক করে দেখা যায় তিন ছাত্রী রয়েছে শালিমার স্টেশনে। সেইমতন শালিমার স্টেশনে সাদা পোশাকে শুরু হয় পুলিশের তল্লাশি। শালিমার স্টেশনের ওয়েটিং রুমে লুকিয়ে থাকা ছাত্রীদের আটক করতে সক্ষম হয় সাঁতরাগাছি থানার পুলিশ।
এরপর উদ্ধার হওয়া ছাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রীরা জানায়, অনলাইনের মাধ্যমে তারা যোগাযোগ করে একটি গানের ব্যান্ডের সাথে। তাদের সাথেই স্টেজে গান বাজনার সুযোগ পেয়ে তারা বাড়িতে না জানিয়েই দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছিল। পুলিশের অনুমান, ছাত্রীদের প্রলোভন দেখানোর পিছনে রয়েছে হিউম্যান ট্র্যাফিকিংয়ের সাথে যুক্ত দুষ্কৃতীরা। ছাত্রীদের মোবাইল ফোন আসা বেশ কিছু ফোন নম্বর ধরে এদের খোঁজ পেতে চাইছে পুলিশ। এদিকে, উদ্ধার হওয়া ছাত্রীদের তুলে দেওয়া হয় শালিমার রেল পুলিশের হাতে। শুক্রবার তাদের আদালতের হস্তক্ষেপে আইনি পক্রিয়ার মাধ্যমেই তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।