নিউজ ডেস্ক: মানচিত্র বিতর্কে এবার চিনের বিরুদ্ধে কথা বলল রাশিয়াও। উল্লেখ্য, ভারত-সহ বেশ কয়েকটি সীমান্ত লাগোয়া দেশের জমিকে নিজেদের অংশ বলে মানচিত্রে প্রকাশ করেছে বেজিং। এর মধ্যে ভারতের অরুণাচলকেও শামিল করায় উপযুক্ত জবাব দিয়েছিল ভারত। ভারত চিনের প্রকাশিত মানচিত্রের কড়া প্রতিবাদ করে জানিয়ে বলেছিল, শুধুমাত্র ভেবে নিলেই অন্য কোনও দেশের এলাকা চিনের হয়ে যাবে না। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত মানচিত্রে রাশিয়ার সীমান্ত এলাকার কিছু অংশকেও নিজের বলে দাবি করে বসে বেজিং। আর সেই নিয়ে প্রথমবার প্রকাশ্যে অন্যতম বন্ধুদেশ চিনের সমালোচনা করতে দেখা গেল রাশিয়াকে।
সূত্রে প্রকাশ, রাশিয়া সীমান্ত লাগোয়া বোলশই- উসোরিস্কি দ্বীপকে নিজেদের মানচিত্রে দেখিয়ে দিয়েছে চিন। দ্বীপটি অবস্থিত চিন-রাশিয়া সীমান্তের উত্তর-পূর্ব সীমায়। দ্বীপটিতে উভয় দেশেরই অংশ রয়েছে। কিন্তু তা অস্বীকার করে সম্পূর্ণ দ্বীপটি নিজেদের বলে মানচিত্রে দাবি করেছে জিংপিং-এর দেশ। এবার সেই নিয়েই চটল চিনের বেস্ট ফ্রেন্ড রাশিয়া। রাশিয়া বয়ান জারি করে বলে, ২০০৫ সালে এই দ্বীপ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু আলোচনার পর সমঝোতা হয়েছিল। তারপরেই উভয় দেশের মতানুসারেই ভাগ করা হয়েছিল এলাকা। রাশিয়ার বক্তব্য, চিনের এই পদক্ষেপের ফলে দুই দেশের বহু বছরের পরিশ্রম জলে গেল। এমনকি পুতিনের দেশ এও দাবি করে, এটা কোনও ভুল নয়। বরং জেনেবুঝেই এই কাজ করেছে চিন।
প্রসঙ্গত, চিন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। তবে বিগত মাসখানেক ধরে কিছুটা চিড় ধরেছে সেই সম্পর্কে। তার একটা কারণ অবশ্যই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নীতি। তবে এই সম্পর্ক কিছুটা ক্ষুণ্ণ হওয়ার জন্য বড় ভূমিকা রয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের। প্রযুক্তিগত দিক থেকে চিনের প্রতি অন্ধ ভরসার ফলে চিনা অস্ত্রশস্ত্রের উপর বিশেষ ভরসা করে ইউক্রেনকে টক্কর দিতে নেমেছিল রাশিয়া। কিন্তু চিনের তৈরি ট্যাঙ্ক ও অস্ত্র খুব সহজে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন সেনা। অন্যদিকে, সম্প্রতি ভারতের আগে চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয় করতে লুনা-২৫ যান পাঠিয়েছিল রাশিয়া, যেটির ল্যান্ডারে ব্যবহৃত হয়েছিল চিনা প্রযুক্তি এবং কাঠামো। কিন্তু সেই যানটিও গতি সমালাতে না পেরে ভেঙে পড়ে চাঁদের বুকে। আর বড় অঙ্কের বাজেটে পাঠানো মিশনটির এহেন ব্যর্থতার পরও চিনের প্রতি বিরাগভাজন হয় রাশিয়া। আর এবারে ম্যাপে রাশিয়ার অংশ নিজেদের বলে দেখানোয় চিনের বিরুদ্ধে জমা ক্ষোভ প্রকাশ্যে উগরে দিল এবার পুতিনের দেশ।