নিউজ ডেস্ক: প্রয়াত অভিনেতা সমীর মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার বেহালায় নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বর্ষীয়ান এই অভিনেতার ভাই জানান দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্য জনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে ভর্তি করাতে হয়েছিল হাসপাতালেও। কয়েকদিন আগেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন সমীর মুখোপাধ্যায়। তবে শুক্রবার আচমকাই ঘটে অঘটন। সকাল থেকেই তাঁর শরীর ভালো ছিল না বলেই জানিয়েছেন অভিনেতার ভাই বিমান মুখোপাধ্যায়। একাধিক বার বমি হয়েছিল বলেও তিনি জানান। তারপরেই হঠাৎ করেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
তাঁর মৃত্যুতে বাংলা বিনোদন জগতে নেমে এসেছে দুঃখের ছায়া। ৭০-৮০ দশকে একাধিক বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’। তবে দীর্ঘদিন বড় পর্দা থেকে দূরেই ছিলেন তিনি। অভিনয় থেকে দূরে একান্তে জীবন যাপন করছিলেন অভিনেতা। পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন আর্টিস্ট ফোরাম সহ অন্যান্য শিল্পীরাও। আর্টিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতির মাধ্যমে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের সদস্য তথা বর্ষীয়ান অভিনেতা সমীর মুখোপাধ্যায় আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমরা সকলেই তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত।’
তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন থিয়েটার অভিনেতা দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি লেখেন সমীরবাবু ভালো থাকবেন। ছোটবেলায় আরো এক স্মৃতি হারালো। এই মানুষগুলোর খোঁজ আমরা কেউ নেই না। বড় পর্দার অন্তরালে যাওয়ার পর থেকেই আর দেখা যেত না বর্ষীয়ান এই অভিনেতাকে। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বাংলা সিনেমা জগতের অন্যতম পথিকৃৎ এই অভিনেতা। ফলে তাঁকে তাঁর যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি বলেই নিজের পোস্টে বলেন তিনি। এরই সঙ্গে বর্তমান কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দেহরক্ষী সঙ্গে নিয়ে ঘোরার প্রবণতাকেও কটাক্ষ করেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবিতে তাঁর দেখা পাওয়া গিয়েছে। যদিও অভিনেত্রী দাবি করেন কোনদিন তাঁকে গাড়ি চড়ে স্টুডিওতে ঢুকতে তিনি দেখেননি। সাদামাটা জীবন যাপন করতেন সমীর মুখোপাধ্যায়। সুদীপ্তা আরো বলেন পর্দার শিল্পী এমন সাদামাটা বলেই মানুষ তাঁকে ভুলে গিয়েছে। এখনকার মত রিলস বানালে কিংবা দেহরক্ষী নিয়ে চললে হয়তো তাঁকে মনে রাখত। তাঁর মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপনের পাশাপাশি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সুদীপ্তা।