নিউজ ডেস্ক: আইনসভায় মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব কি সত্যিই বাড়বে? মহিলা সংরক্ষণ বিল লোকসভায় পেশ হতেই এ প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার এ বিষয়ে সন্দিহান হলেও অনেকে পূর্বের অভিজ্ঞতা মনে করাচ্ছেন। বছরের পর বছর এনিয়ে টানাপড়েন লক্ষ্য করা গিয়েছে। মঙ্গলবার নতুন সংসদ ভবনে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল পেশ করেন মহিলা সংরক্ষণ বিল। যার পোশাকি নাম ‘নারী শক্তি বন্ধন অধিনিয়ম’।
কী এই ‘নারী শক্তি বন্ধন অধিনিয়ম’?
• লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে
• ৩৩ শতাংশের মধ্যে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের জন্য উপ-সংরক্ষণ করা হবে
• প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনের পর সংরক্ষিত আসনগুলিকে পরিবর্তন করতে হবে
পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমানে মহিলা ভোটারদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সেই ভোটব্যাঙ্কেই নজর মোদী সরকারের। সুতরাং লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিল কেন্দ্রের তুরুপের তাস হতে পারে।
মহিলা সংরক্ষণ বিল আইনে পরিণত হলে কী হবে?
• সংরক্ষণের জন্য অনেক পুরুষই লোকসভা বা বিধানসভায় প্রার্থীপদ পাবেন না
• বর্তমানে লোকসভায় মহিলা সদস্যের সংখ্যা ১৫ শতাংশের ধারে কাছে।
• আবার অনেক বিধানসভায় মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা ১০ শতাংশের কম
• ফলে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ হলে পুরুষদের প্রার্থীপদ কমবে
এদিকে, মঙ্গলবার বিল পেশ হওয়ার আগেই তরজা শুরু হয় লোকসভায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে বেশ কয়েকবার এই বিল পেশ করা হয়। কিন্তু যথেষ্ট সমর্থনের অভাবে পাশ করানো যায়নি এই বিল। তবে আমি মনে করি ঈশ্বর আমাকেই বেছে নিয়েছেন এই বিলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।”
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র কটাক্ষ করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি জানান, বাজপেয়ী আমলের অনেক আগে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনই এই বিল আনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই বিলের নাম পরিবর্তন করে জনতাকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে সরকার। এদিকে, তাঁর এই দাবির জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “সেই সরকারের আর অস্তিত্ব নেই। বিলটির মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে।” তবে শুধু অধীরই নন। ‘বিলটি নিজেদের’ বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। মঙ্গলবার সাংসদ ভবনে প্রবেশের আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ইয়ে বিল আপনা হে’।
প্রসঙ্গত, মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা বলে সব রাজনৈতিক দলই। নরেন্দ্র মোদীও মহিলাদের আরও ক্ষমতা দিতে চান। এই বিল তাঁর সেই উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।