নিউজ ডেস্ক: শিলিগুড়ি খাটাল সমস্যা সমাধানে
কাঁটা ইকো সেন্সেটিভ জোন! ইকো সেন্সেটিভ
জোনের পরিসীমা ঘোষণার দিকে তাকিয়ে রয়েছে পুরসভা। খাটাল শহরের
বাইরে অপসারনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে উঠেছে ইকো সেন্সেটিভ জোনের পরিসীমা। শিলিগুড়িতে বাম ও তৃণমূল উভয় আমলের দীর্ঘ অপরিকল্পনা ও চূড়ান্ত প্রশাসনিক ব্যর্থতার নমুনা হিসেবে জলন্ত
সমস্যা হয়ে উঠেছে শহরের মাঝে জনবসতি এলাকায় সারি সারি গবাদি পশুর খাটাল।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের বাম ও তৃণমূল বোর্ডের সময়কালে শহরের লাইফলাইন মহানন্দা নদী তীরবর্তী পার জুড়ে সারি
সারি খাটাল বিস্তার করেছে। যার জেরে নদী দূষনের তালিকার ওপরে
দিকে নাম উঠে আসে মহানন্দার। খাটালের
যাবতীয় আবর্জনা সরাসরি ফেলা হয় মহানন্দা নদীতে। তার
ওপর মেট্রো সিটির দৃষ্টি দূষণ অন্যতম কারণ তো বটেই, পুরনিগমের
৩,৪,৫ নাম্বার ওয়ার্ডে সারি সারি জন
বসতি এলাকায় থাকা খাটালগুলি ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরের
বুকে। ডেঙ্গি থেকে বিভিন্ন ধরনের মশা মাছি বাহিত রোগের আঁতুড় ঘর শহরের জনবসতি
এলাকায় সারি সারি থাকা গবাদি খাটালগুলি। বিগত বছর শহর জুড়ে ডেঙ্গি ভয়ঙ্কর রূপ
নেয়। ডেঙ্গি মোকাবিলায় খাটাল গুলি শহর থেকে দূরবর্তী এলাকায় স্থানান্তরিত করার
নির্দেশ দেন মেয়র গৌতম দেব। এমনকি ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের তরফেও মহানন্দা
নদীদূষণ রোধে পুর প্রশাসনকে কড়াকড়ি ভাবে নদী তির থেকে খাটাল স্থানান্তরিত করার
নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এনজিটির তরফে নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেধে দেওয়া হয়েছে। পুর দফতরের তরফে একাধিকবার মেয়র
গৌতম দেব খাঁটাল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। চূড়ান্ত সময়সীমা ধার্য করে নির্দেশিকা
নোটিশের পর নোটিশ কয়েক দফায় দেওয়া হয়। তবে জগদ্দল পাথরের মত জনবসতি এলাকায় রয়েছে
প্রায় ৬০-৬৫টি খাটাল।
পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে এই খাটাল মালিকদের
অধিকাংশকেই শহরের বাইরে স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে। সেখানে শহরতলির বাইরে জায়গাও
চিহ্নিত করা হয়। কিছু খাটাল মালিকদের নিজস্ব জায়গাও রয়েছে শহরতলীর বাইরে। তবে
তারপরও কেন স্থানান্তর করা যাচ্ছে না তা ঘিরে রয়েছে যেন যবনিকা! জানা গিয়েছে আসলে
ইকো সেন্সেটিভ জোনের পরিসীমা নির্ধারনের ওপরই নির্ভর করে রয়েছে পুরসভার সিদ্ধান্ত।
কারন মহানন্দা অভয়ারণ্যকে আবর্ত করেই শিলিগুড়ি
শহর গড়ে উঠেছে। প্রাথমিক যে নির্দেশিকা রয়েছে তাতে মহানন্দা অভয়ারণ্যের ৫ কিমি
এলাকা পর্যন্ত ইকো সেন্সেটিভ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা
হয়েছে। যাতে এই বিস্তীর্ণ অংশে সমস্ত রকম নির্মাণ কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি
থাকছে। এই পরিসীমা কার্যকরী হলে সংকটের মুখে পড়বে শিলিগুড়ি
ক্রম বর্ধমান নগরায়নের একটা বড় অংশ। খাটাল শহর থেকে
স্থানান্তরিত করতে হলেও সেই ইকো সেন্সেটিভ জোনের মহানন্দা
অভয়ারণ্য থেকে পাঁচ কিমি আওতায় মধ্যে পড়ছে। যার জেরেই খাটাল শহরের বাইরের স্থানান্তরে
মালিক পক্ষের ওপর জোর দেওয়া ও জায়গা চিহ্নিত করে উঠতে পারছে
না পুরসভা। তবে রাজ্যের তরফে ইকো সেন্সেটিভ জোনের ক্ষেত্রে
পরিসীমা এক কিমি করার পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব রাজ্য বন বিভাগের তরফে পাঠানো হয়েছে
আদালত ও কেন্দ্রকে। ইকো সেন্সেটিভ জোনের পরিসীমা পাঁচ কিমি
কমিয়ে এক কিমি করার প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। সম্প্রতি চূড়ান্ত পরিসীমার নির্ধারণ
করে ঘোষণা করা হবে বলেই জানা গিয়েছে। তাই ইকো সেন্সেটিভ
জোনের চূড়ান্ত ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত খাটাল স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়ে দোটানার
মধ্যে রয়েছে পুরসভা বলেই জানাচ্ছেন শিলিগুড়ি শহরের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার।
তিনি বলেন-ইএসজেড -এর পরিসীমা নিয়ে
সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত খাঁটাল স্থানান্তরের কাজ আটকে রয়েছে। রাজ্যের
পুনঃবিবেচনার আবেদন গ্রাহ্য হলে শহরের বাইরে খাটাল অপসারনের ক্ষেত্রে পুরসভার
নির্দেশ মতো মালিকদের দ্রুত স্থানান্তরিত করতে হবে। আমরা চূড়ান্ত নির্দেশিকার অপেক্ষায়
রয়েছি।