নিউজ ডেস্ক: সুন্দরবনের
প্রত্যন্ত দ্বীপগুলির সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
পাথরপ্রতিমার দু‘টি
নদীপথে চারটি ভাসমান জেটি আগামী ৬ মাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। এজন্য আনুমানিক
ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী সোমবার
প্রস্তাবিত জেটিগুলির স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার
প্রত্যন্ত পাথরপ্রতিমা ব্লকের ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯ টি পঞ্চায়েত নদীমাত্রিক এলাকায় অবস্থিত।
বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা খেয়া পারাপার। বর্তমানে বিভিন্ন ঘাটের হালও বেহাল।
সেকারণেই প্রচন্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল নদীপথে যাতায়াতকারী হাজার হাজার
যাত্রীকে। সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেন স্থানীয় বিধায়ক সমীর কুমার জানা।
মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনায় এবার বিধায়কের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
বিধায়ক জানান, “যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা ভেবে
রাজ্য সরকার মোট ৩৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চারটি পল্টুন জেটি তৈরি করবে।
জেটিগুলি নির্মাণ করা হবে পাখিরালা নদীর উপর অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের
বিরাটবাজারে, বনশ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বনশ্যামনগর ঘাটের
কাছে এবং চালতাবনিয়া নদীর ওপর বনশ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিবাঙালের ঘাট ও
জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদমারি ঘাট এলাকায়। চারটি জেটির নির্মাণকাজ শেষ হলে
পাথরপ্রতিমার তিন-চারটি দ্বীপাঞ্চলের সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। এরকম আরও কয়েকটি
ভাসমান জেটি তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। এর ফলে পাথরপ্রতিমা ছ‘টি
গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে বলে জানান তিনি।
ইতিমধ্যেই
জেটিগুলি তৈরির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিবহনমন্ত্রী এদিন
সেই কাজ এবং নির্মীয়মান জেটিগুলির স্থান খতিয়ে দেখতে ওই এলাকাগুলিতে যান। তাঁর
সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। পরিবহনমন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনায় ও
স্থানীয় বিধায়কের উদ্যোগে যে চারটি ভাসমান জেটি তৈরি হতে চলেছে তাতে বড় চার
চাকার গাড়িও যেমন নদী পারাপার হবে তেমন সাধারন মানুষও জেটিতে পায়ে হেঁটে চলাচল
করতে পারবেন। এর ফলে প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও সহজ থেকে
সহজতর হবে। মন্ত্রী বলেন, “আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে
চারটি জেটির কাজ সম্পূর্ণ হলে সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলির সঙ্গে কলকাতার
যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হবে। বাসিন্দাদের যাতায়াতের দুর্গম পথ সুগম হবে।
পর্যটকরা সহজেই গাড়িতে বঙ্গোপসাগরের খুব কাছাকাছি দ্বীপে সবুজ প্রকৃতির কাছে
পৌঁছতে পারবেন। পর্যটনশিল্প গড়ে উঠলে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থারও দ্রুত উন্নতি
ঘটবে”। শুধু জেটি তৈরিই
নয়, তৈরি হবে বসার ও বিশ্রামের জায়গা,
শৌচালয়। থাকবে কিছু দোকানপাট। সবমিলিয়ে খুব শীঘ্রই এক নতুন সাজে
সেজে উঠতে চলেছে প্রত্যন্ত পাথরপ্রতিমা।