নিউজ ডেস্ক: স্কুলের পর এবার কলেজে শিক্ষক
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মের অভিযোগ উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। যার জেরে আদালতের
তোপের মুখে কলেজ সার্ভিস কমিশন। প্রকাশিত প্যানেলে নাম ও র্যাংকের উল্লেখ থাকলেও, প্রার্থীর কোন পরীক্ষায় কত অংক
পেয়েছেন তা উল্লেখ না থাকায় কার্যত অসন্তোষ
প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এনিয়ে কারণ দর্শিয়ে ১০ দিনের মধ্যে
কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী
১৩ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি।
এই মামলায় কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের কথা স্মরণ করিয়ে তাঁদের মত অবস্থা হবে
বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২০ সালে কলেজ সার্ভিস কমিশনের
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল। ২০২৩ সালে প্যানেল প্রকাশিত হয়। মামলাকারি মোনালিসা
ঘোষের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত অভিযোগ করেন, “২০২৩-এ কলেজ
সার্ভিস কমিশনের তরফে যে প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে
শুধু প্রার্থীদের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রকাশিত হলেও নম্বর প্রকাশ করা হয়নি”। সেই অভিযোগ নিয়েই নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই
প্রার্থী। তাঁর দাবি, স্বচ্ছতা আনতে প্যানেলে নম্বর প্রকাশ
করতে হবে।
কিসের ভিত্তিতে প্যানেল প্রকাশ করা হল, কমিশনের কাছে তা জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কমিশনের আইনজীবী জানান,
“প্রাপ্ত নম্বর, গবেষণা পত্র সহ বেশ কিছু
দেখেই প্যানেলে নাম ওঠে”। এ কথা শুনে বিচারপতি বলেন,
“চেয়ারম্যান নিজে কটি পেপার (গবেষণা পত্র) জমা দিয়েছেন,
তা ওঁকে জিজ্ঞেস করতে চাই। এখানে নম্বর প্রকাশ করলে সমস্যা কোথায়?”
চেয়ারম্যান দীপক করের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “ওঁকে মনে করিয়ে দেবেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য এখন জেলে আছেন। পার্থ
চট্টোপাধ্যায়ও এখনও জেলে আছেন। তিনি যেন সেটা ভুলে না যান।”
প্রসঙ্গত স্কুল ও কলেজ সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত বহু মামলা ঝুলে
রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে ঘুষ
দিয়ে হাজার হাজার শিক্ষক নিয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর
বিরুদ্ধে। অভিযোগ এই টাকা ব্যবহার হয়েছে এক শীর্ষ নেতৃত্বের কোম্পানিতে। সেই মামলার
তদন্ত করছে ইডি। এই অবস্থায় কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্যানেলে যদি গরমিল ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নয়া আঙ্গিক যোগ হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।