নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ দমদমে আবারও এক ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হল। ৫৮ বছর বয়সি মৃত মহিলার নাম শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দক্ষিণ দমদমে এক তরুণীর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়। সমাপ্তি মল্লিক নামে ওই তরুণী ২১ নম্বর ওযার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। আর শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙুর শ্যামাপ্রসাদ কলোনির বাসিন্দা। এই মৃত্যু নিয়ে সরাসরি পুরসভার গাফিলতিকে দায়ী করছেন আত্মীয়েরা।
শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর মেয়ে লভলিনা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১৯ সেপ্টেম্বর শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ জানা যায়। পরের দিন তাঁকে উল্টোডাঙার একটি বেসরকারি নার্সিহোমে ভর্তি করা হয়। ২ অক্টোবর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার পুরসভার দিকে আঙুল তুলছে। মৃতার দেওর মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, পুরসভা বাড়ির সামনের জঞ্জাল সাফাই না করার জন্যই প্রাণ দিয়ে তার মূল্য চোকাতে হল। তিনি বলেন, “প্রায় তিন মাস ধরে বাড়ির সামনে আবর্জনা জমে ছিল। সেগুলো পরিষ্কারের জন্য বললেও সরানো হচ্ছিল না। কাউন্সিলরের দেখা মেলে না। কাউন্সিলরের অনুগামী বা যে মহিলারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে খোঁজ নেন তাদের বলেও লাভ হয়নি। ওখানেই জমা জলে মশা জন্মেছে। পুরসভার উদাসিনতার জন্যই বৌদি মারা গেলেন”।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২০ নম্বর ওযার্ডের কাউন্সিলর কৃষ্ণপদ দত্ত অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “ওয়ার্ডের সর্বত্রই জঞ্জাল পরিষ্কার করা হয়। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাও কম। শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁর অন্য সমস্যা ছিল। চার-পাঁচ বছর ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন। ওঁর স্বামী বলেছেন হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন”।
শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে। যদিও তারই সঙ্গে নানা সমস্যার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। মৃতার মেয়ে লভলিনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার ডেঙ্গি পজিটিভ ধরা পড়তেই মায়েরও পরীক্ষা করানো হয়। মায়ের ডেঙ্গি পজিটিভ আসার পরই অবস্থার অবনতি হয়। প্লেটলেট কাউন্ট ২০ হাজারে নেমে এসেছিল। নার্সিংহোমে ভর্তি করানোর পর অবস্থার উন্নতি হয়। মায়ের কোমর্বিডিটি ছিল। পরে কোমায় চলে যায়।” এরপরেই তাঁর সংযোজন, “বাড়ির পাশে আবর্জনা, বালি জমে থাকে। সবাই সবার কাজটা করলে সমস্যা হয় না”। কাউন্সিলর কৃষ্ণপদ দত্ত বলেন, “খামখেয়ালি বৃষ্টি। সবসময় বৃষ্টির থামার সঙ্গে সঙ্গে সব জায়গা পরিষ্কার করা যায় না। কোথাও পরিষ্কার পর আবারও বৃষ্টিতে জল জমছে। তবে পুরসভা সবসময় খেয়াল রাখছে”।
দক্ষিণ দমদম পুরসভায় এবছর ডেঙ্গিতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্রমেই ডেঙ্গির হটস্পট হয়ে উঠেছে দক্ষিণ দমদম। ডেঙ্গি মোকাবিলায় সচেতনতার উপর জোর দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।