নিউজ ডেস্ক: মন্ডপ সজ্জার কাজ করে পুজোয় বাড়তি আয়ের স্রোত খুঁজে পেয়েছেন বালুরঘাটের মহিলারা। বেশ
কয়েকবছর ধরে চলা এই প্রবনতা দিন দিন বেড়ে চলছে তাঁদের মধ্যে।
নিপুণ সুক্ষ্ম হাতের কাজের কদর বেড়েছে
ডেকরেটারদের কাছে।
দক্ষিণ
দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে রয়েছে বেশ কয়েকটি নামকরা ডেকরেটার সংস্থা রয়েছে। জেলা তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এরা মন্ডপ
তৈরির বরাত পেয়ে থাকে। ফলে মন্ডপ সজ্জার
সাজ ও সরঞ্জাম তৈরিতে প্রয়োজন প্রচুর শ্রমিক। এতদিন এই কাজে পুরুষদের দেখা যেত। শেষ বছর কয়েক ধরে সেই নিয়মের ব্যাতিক্রম দেখা
দিয়েছে বালুরঘাটে। সুক্ষ্ম হাতের কাজে ধৈর্য্যর পাশাপাশি দরকার শৈল্পিক নিপুণতা। ডেকোরেটাররা এখন এই কাজে
মেয়েদের নিয়গ করা শুরু করেছে। প্রথমে দু-চারজন দিয়ে শুরু
হলেও সেই সংখ্যাটা এমূহূর্তে কয়েকশো। জেলার সদর বালুরঘাটে থাকা নামকরা ‘ভাই ডেকোরেটার’এর ওয়ার্কশপে মহিলা শিল্পীদের শৈল্পিক
নিপুনতা চোখে পড়ার মত।
পুজোর এই মরসুমে একটি ওয়ার্কশপে শত শত গৃহবধূ ও মেয়েরাই নিয়োজিত। পুরুষদের
দেখা মেলেনি এখানে। অভিজ্ঞ বা প্রধান শিল্পীর নির্দেশনায় হাতের
সুক্ষ্ম কাজ মহিলারা করে চলেছেন চরম ধৈর্য্য সহকারে। হোগলা
পাতা, থার্মোকল, রঙিন পেপার, ভেলভেট কাপড়,
হরেক রঙের কাগজ, আঠা, চুমকি
ইত্যাদির ব্যবহারে চলছে পাখি, গাছ, ফুল,
পাতা বা অন্য ধরনের নকশা তৈরির কাজ। ঘরে বসে ধীর স্থির এমন কাজে
উৎসাহ দেখা যায় মহিলা শিল্পীদের।
কর্মরত মহিলা শিল্পী সপ্তমী দাস, মমতা দাস জানান, তারা এখানে থেকেই হাতের কাজ
শিখেছেন। উপার্জিত অর্থে পুজোর দিনগুলি তাদের কাছে আনন্দ
মুখর হয়। ছেলে মেয়ে বা পরিবারের পাশে এই সময় বাড়তি অর্থ নিয়ে পাশে দাঁড়াতে পারেন তারা। বেশ কয়েক বছর ধরে তারা এই কাজ করে আসছেন। প্রয়োজনে এখন
নিজের বাড়িতেই নানা রকম হাতের কাজ করতে পারবেন। নকশা তৈরির কাজে যুক্ত কলেজ পড়ুয়া
সপ্তমী সিং বলেন, “পড়াশোনার পাশাপাশি কয়েক
বছর হতে যায় এই কাজ করছি। পরিবারের পাশে দাড়াতে এখন এই
কাজকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি”। অন্যদিকে,
ডেকোরেটার ভাই এর কর্ণধার শিখা সাহা চৌধুরী বলেন, “ঘরে বসে নকশা তৈরির কাজে
ধৈর্য্য বিশেষ প্রয়োজন। যা মেয়েদের অনেকটা
বেশি। এছাড়া সুক্ষ্ম কাজগুলি তারাই ভালো করেন। পাশাপাশি, মহিলাদের
স্বাবলম্বী করার ভাবনাও ছিল আমাদের”। জেলার বালুরঘাট, হিলি, গঙ্গারামপুরে কয়েকটি মন্ডপের বরাত পেয়েছেন
তারা। এছাড়া, শিলিগুড়ি, কোচবিহার,
জলপাইগুড়িতেও তাদের মন্ডপের কাজ চলছে। এই কাজে প্রচুর নকশা প্রয়োজন।
সেকারণে তাদের দুটি ওয়ার্কশপে অন্তত ২০০ মহিলা কাজ করছেন। পুজোর চারমাস আগে থেকে
কাজ শুরু হয়, যা চলে পুজোর একমাস পরেও।