নিউজ ডেস্ক: ঘুষ নিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ! টাকা ও উপহারের বদলে সংসদে আদানির সঙ্গে মোদির যোগসাজেশের কল্পকাহিনি তুলে ধরেছেন তিনি! মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। মৌখিক অভিযোগ শুধু নয়, লোকসভা থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়ে স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠিও লিখেছেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ। একইসঙ্গে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অনন্ত দেহাদরি। তাঁদের অভিযোগ, দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানী থেকে টাকা ও উপহার নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মহুয়া। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সংসদের প্রিভিলেজ কমিটির হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
একদিকে যখন নিশিকান্তের অভিযোগে বিপর্যস্ত মহুয়া ঠিক সেই সময় তার অতীত তুলে ধরা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভাইরাল হচ্ছে তৃণমূল সাংসদের বেশ অতীতের রঙিন মেজাজের কয়েকটি ছবি। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের সঙ্গে শ্যাম্পেনের গ্লাস হাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কোথাও আবার চুরুট মুখেও দেখা গিয়েছে ‘স্টাইলিস’ এই সাংসদকে। ছবি যে বুজরুকি বা বানানো নয় তা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। খানিকটা অপ্রস্তুত মহুয়া বিজেপিকে ‘ট্রোল সেনা’ বলে পাল্টা কটাক্ষ করে প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে লেখেন, “নৈশভোজে থাকা বাকিদের ছবি কেন ক্রপ করা হল? বাংলার মহিলারা নিজেদের জীবন উপভোগ করেন, মিথ্যার উপর বাঁচে না।”
যেই বিষয় নিয়ে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে সেই অস্ত্রেই শান দিয়ে মহুয়া একের পর এক তির ছুড়েছেন বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে। এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালা ও অন্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। স্পিকার সেগুলির ব্যাপারে আগে সিদ্ধান্ত নিন, তারপর আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাবকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
তিনি আরও লেখেন, “যদি আদানি গোষ্ঠী আমাকে চুপ করানোর জন্য বা চরিত্রহনন করার জন্য সঙ্ঘের কিংবা ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালাদের ভুয়ো নথি কাজে লাগায় তাহলে আমি বলব সময় নষ্ট কর না”। টুইট যুদ্ধে তাঁর সংযোগ, “আশা করব, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি আমার চৌকাঠে পৌঁছনোর আগে আদানির কয়লা দুর্নীতি নিয়ে অন্তত একটি এফআইআর করবে।”
বেশ বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন তৃণমূলের এই সাংসদ। তাঁর লাইফস্টাইলেও বিলাশবহুলতার ছাপ রয়েছে যথেষ্ট। তার রুচি বোধ সঙ্গে লাক্সারি ব্রান্ড ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সংসদে একবার তাঁর বিখ্যাত ‘লুই ভিঁতো’-র ব্যাগ লুকোতে হয়েছিল। কেন ব্যাগ শাড়ির আচলের তলায় ঠায় নিয়েছিল তার জন্য ট্রোল হতে হয় মহুয়াকে। সেবেলায় লোকসভায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াছিলেন তাঁর সহকর্মী সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। এখানেই শেষ নয়, বিলাসবহুল গাড়ি চেপে সংসদেও আসতে দেখা যায় তাঁকে। যা নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল মহুয়াকে।