নিউজ ডেস্ক: ‘বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহু দূর’, আর এই বিশ্বাস নিয়েই দেবী দূর্গা হিসাবে পূজিত হন মা কেঁদুয়াবুড়ি। ঝাড়গ্রাম থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বালিপাল গ্রাম। চারিদিকে সবুজ গাছ পালায় ঘেরা মনোরম পরিবেশে অবস্থিত মা কেঁদুয়াবুড়ির মন্দির। বালিপাল ছাড়া বাঘাগ্যাড়া, রামচন্দ্রপুর, আসুবনি সহ প্রায় ৩৫টি গ্রামের মানুষ এই মন্দিরেই আসনে মা দূর্গার আরাধনার জন্যে।
মা কেঁদুয়াবুড়ির এই মন্দির ঘিরে রয়েছে বহু ইতিহাস ও লোকমুখে প্রচারিত বিভিন্ন গল্পকথা। সোড়শ শতকে চিয়ারা পরগনার অধীনে ছিল গোপিবল্লবপুরের এই গ্রাম। আনুমানিক ৫০০ বছর আগে পুরীর ক্ষত্রিয় রাজকুমার বালিপালদেব রাজ্যচ্যুত হয়ে এই এলাকায় এসে পৌঁছান। কেঁদ গাছে ভরা জঙ্গলের একটি নিমগাছের তলায় আশ্রয় নেন ক্ষুদার্থ রাজকুমার। সেইসময় উপজাতি কিশোরীর রূপ ধরে এসে দেবী দূর্গা রাজকুমারকে কেঁদ ফল খেতে দেন। পরে স্বপ্নাদেশে সেই রাজকুমারের কাছে পুজো চান দেবী। তবে কোনও মন্দিরে নয়, খোলা আকাশের নিচে নিম গাছের তলায় পুজো করার শর্ত দেন মা নিজেই। আর বলেন শুধুমাত্র নিম্নবর্নের বাগদিরাই করবেন সেই পুজো। আজও সেই শর্ত মেনেই পুজো হয়ে আসছে এখানে।
যুগ যুগ ধরে দেবীপক্ষের সূচনার পর থেকে কেঁদুয়াবুড়িকে মা দূর্গা রূপে পুজো করেন গ্রামবাসীরা। এমনকি নিয়ম মেনে এখনও হাত চিরে রক্ত দিয়ে মায়ের পুজো সম্পূর্ণ হয় এখানে। শুধু তাই নয়, মা কেঁদুয়াবুড়ির পুজো দেওয়ার পরই এলাকার বাকি পুজোগুলোর সূচনা হয় এখনও।