নিউজ ডেস্ক: ওদের কেউ তৈরি করছেন দুর্গা প্রতিমা, কেউ বানাচ্ছেন শোলার চাঁদমালা। কারও হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে মাটির ঘট-প্রদীপ। কেউ বা ব্যস্ত অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরিতে। দশভুজার পুজোর নেপথ্যের কারিগর ওরাই! অথচ ওদের গ্রামেই নেই দুর্গাপুজো। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কেশপুর ব্লকের অকুলসাড়া গ্রাম। পুজোর সাজসরঞ্জাম তৈরি করে গোটা গ্রাম। গ্রামেই রয়েছে লৌহকার, কুম্ভকার, চর্মকার, ছুতোর থেকে থেকে শুরু করে বাজি তৈরির কারিগররাও।
কেশপুর ব্লকের এই গ্রামে প্রায় ২৯০ টি পরিবারের বাস। গ্রামে নানান জাতি ধর্ম বর্নের মানুষের বাস। সরকারি চাকরি করেন মাত্র দু-তিনজন। বাকি প্রত্যেকেই ব্যস্ত পুজোর কাজে। প্রতি বছর পুজো মানে ওদের কাছে বাড়তি রোজগার। গ্রামের প্রায় সাত আটটি পরিবার শোলার কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিমা তৈরি করেন সাতটি পরিবার। মাটির সরঞ্জাম তৈরির সঙ্গে যুক্ত পরিবারের সংখ্যাই গ্রামে বেশি। অথচ কেশপুর ব্লকের এই অকুলসাড়া গ্রামেই হয়না দুর্গাপূজা। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পরে গ্রাম খালি করে মা চলে যান। পুজোর কদিন বাড়তি রোজগার হলেও তারপর একটা আক্ষেপ থেকেই যায়।
গ্রামে প্রত্যেকবছর সযত্নে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরি করে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পুজো মণ্ডপে সেই প্রতিমা পৌঁছে দেন গ্রামের মৃৎশিল্পীরা। সবশেষে বেশ কিছুটা বিষন্নতাও গ্রাস করে এলাকাবাসীদের। তবে গ্রামের মানুষদের দাবি, এলাকায় দুর্গাপূজা হলে ভালোই হবে কিন্তু গ্রামের মানুষদের পুজোর আয়োজন করার সামর্থ্য নেই। এমনকি গ্রামের প্রত্যেকেই যেখানে কিছু না কিছু শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত সেখানে শিল্পীদের কোনো ভাতা প্রদান করুক সরকার, এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের একাংশের।