নিউজ ডেস্ক: বুধবার থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতু মেরামতির কাজের
জন্য বন্ধ থাকবে। আট মাস ধরে ধাপে ধাপে চলবে এই কাজ। সে সময় আংশিক
বন্ধ থাকবে দ্বিতীয় হুগলি সেতু। সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি
করেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। হাওড়া থেকে কলকাতায় যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হল
দ্বিতীয় হুগলি সেতু। এই সেতু মেরামতির কাজের কারণে যানজট তৈরি হতে পারে। বিঘ্নিত হবে যাতায়াত ব্যবস্থা। এছাড়াও
আরও বেশ কয়েকটি জটিলতা রয়েছে। যেমন এই রাস্তা দিয়েই নবান্নে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে এই সেতুতে উচ্চ
নিরাপত্তা থাকে। দিল্লি ও বম্বে রোড দিয়ে দ্রুত
কলকাতায় প্রবেশ পথ এই সেতু।
জানা গেছে কাজ শুরুর আগের
পর্বে সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখছেন পিডব্লুডি, হুগলি
রিভার ব্রিজ কমিশন কলকাতা এবং হাওড়া ট্রাফিক পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। এই
নিয়ে গত ১০ অক্টোবর বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেতু
মেরামতির কাজে কী কী বাধা আসতে পারে, তাই নিয়ে আলোচনা হয়।
জানেন কী
কি সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গেছে সেতুর দুই প্রান্তের কাজ আগে শেষ
করতে হবে। হাওড়াগামী দু’টি লেন বন্ধ করে মূল
কাজ চলবে।এর পর কলকাতাগামী দু’টি লেন বন্ধ করে কাজ চলবে। কাজ শুরুর আগে হাওড়া পুলিশকে বিষয়টি জানাতে হবে। ট্রাফিক গার্ডের ওসিদের মধ্যে
সংযোগ রক্ষা করতে হবে। মেরামতির কাজের ফ্লেক্স, বোর্ড টাঙাতে হবে। কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট, জ্যাকেট দিতে হবে। কাজের সময় সেতুতে স্বেচ্ছাসেবী
মোতায়েন করতে হবে। সংবাদ মাধ্যমে ট্রাফিক সংক্রান্ত
নির্দেশিকা প্রকাশ করতে হবে। দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের কাজ না
হওয়ায় দ্বিতীয় হুগলি সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সামগ্রিক সংস্কারের
কাজ করতে গেলে দীর্ঘ সময় সেতুটি বন্ধ রাখতে হবে। ছয় লেনের সেতুর যে অংশে কাজ হবে, তার দুটি লেন বন্ধ রেখে পাশের একটি অংশ খোলা রাখা হবে যান চলাচলের জন্য।
‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি) -এর তত্ত্বাবধানে জার্মানির একটি
সংস্থা এই সেতুর নকশা তৈরি করেছিল। তাদের নজরদারিতেই সংস্কারের কাজ হবে। পূর্ত
দফতরের এক আধিকারিক জানান, সেতুটির বিষয়ে যাবতীয় তথ্য ওই
সংস্থার কাছে রয়েছে। তাই সংস্কারের ক্ষেত্রেও তাদের উপরেই ভরসা রাখছে রাজ্য
সরকার। মোট ১৫২টি কেব্ল দিয়ে এই সেতুটি ধরে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১০টির বেশি
কেব্লের অবস্থা তুলনামূলক ভাবে বেশি খারাপ। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংস্কারের
এই পর্যায়ে সব ক’টি কেব্লেরও সংস্কার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে সংস্কারের এই কাজে
প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে। ১৯৯২ সালের অক্টোবর মাসে জ্যোতি
বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও। ৩১ বছর হয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি সেতুর। অবস্থা বেগতিক বুঝেই সেতু
সংস্কারের কাজে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মনে করছে ওয়াকিবহাল
মহল।