নিউজ ডেস্ক: রবিবার দীপাবলি। এদিন
বাংলার বিভিন্ন জায়গায় হবে শক্তির আরাধনা। কোথাও পুজো হবে শাক্ত মতে কিংবা কোথাও
বৈষ্ণব মতে। বিভিন্ন জায়গার কালীপুজো নিয়ে রয়েছে নানান কাহিনী। কোথাও স্বপ্নাদেশ পেয়ে কোথাও
বা শ্মশানের কালি আবার কোথাও ডাকাতের কালি পুজো করা হয়ে থাকে। তবে নদিয়া জেলাতেই
একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে প্রায় প্রত্যেক ঘরে ঘরেই করা হয় মা কালীর পুজো।
নদিয়ার ধুবুলিয়ার বেলপুকুর গ্রামে প্রায়
সমস্ত বাড়িতেই হয় কালীপুজো। গ্রামবাসীদের থেকে জানা যায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের
প্রপিতামহের আমল থেকেই এই পুজোর সূচনা হয়। তবে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বকালে
গোটা গ্রামে ব্যাপক হারে এই পুজোর প্রচলন ঘটে রাজার নির্দেশেই। ধুবুলিয়ার বেলপুকুর গ্রামের আনাচে-কানাচে
প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই করা হয়ে থাকে কালীপুজো। এছাড়াও ক্লাব এবং বারোয়ারির
পুজোও রয়েছে। গ্রামের বেশিরভাগ কালী মূর্তি দক্ষিণা কালী রূপে করা হয়। কৃষ্ণবর্ণ, টানা চোখ আঁকা হয় মৃৎশিল্পীর তুলির টানে।
গ্রামের প্রবীণ নাগরিক দীপক ভট্টাচার্য জানান,
“একদা এই গ্রামের পাঁচটি পাড়াতে পাঁচজন ব্রাহ্মণ এসেছিলেন,
চুরামনি, বিদ্যালঙ্কার, বাচস্পতি,
সিদ্ধান্ত এবং সান্যাল এই পাঁচজন ব্রাহ্মণ এসেই প্রথম পূজার্চনা
শুরু করেন। এই বাচস্পতি পাড়াতেই রামচন্দ্র বলে এক সাধক সিদ্ধি লাভ করেন। সেই
থেকেই নাকি বংশপরম্পরা ধরে গোটা পাড়াতেই কালীপুজো বিস্তার লাভ করে। গোটা পাড়াতেই
শাক্ত ও বৈষ্ণব দুইমতেই কালীপুজো করা হয়।” বাচস্পতি পাড়ার ন‘বাড়িতে রয়েছে মহাসঙ্খের মালা। বছরে একবার এই মহাসঙ্খের মালা বার করা হয়
কালীপুজোর সময়। এই মহাসঙ্খের মালাতেই ঢালা হয় কারন। কারন ঢালতে ঢালতে শেষ হওয়ার
আগে আবার পরবর্তী কারন ঢালা হয়। কারন একবার বন্ধ হয়ে গেলে আর ঢালা হয় না। ন‘বাড়িতে এখনও প্রচলন আছে ছাগবলির। বহুদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন নদিয়ার বেলপুকুরে
কালী পুজো দেখতে। শাক্ত ও বৈষ্ণবের এই মেলবন্ধন বহু যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে যা আজও
নিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে পালিত হয়।