নিউজ ডেস্ক: উৎসবের মাসে এখনও বাকি বেশ কয়েকটি পুজো। তার মধ্যে অন্যতম ছট পুজো। বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ দেশ ও বিদেশের যে প্রান্তে হিন্দিভাষী মানুষেরা থাকেন সেখানে ধুমধাম করে পালিত হয় এই পর্ব। মূলত নদী বা জলাশয়ের ধারে সুর্যকে দেবতা ও ষষ্ঠী মাকে ছট মাতা রূপে পুজো করায় হয় ছট পুজোয়।
ছট উৎসব চার দিন ধরে চলে এবং ভক্তরা ৩৬ ঘন্টা উপোস রাখেন। মূলত মহিলারা এই উপবাস রাখেন। বাড়ির পুরুষ সদস্যদের জন্য উপবাস অনিবার্য নয়। ছট উপবাসকে একটি কঠিন উপবাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই বছর ছট উৎসব শুরু হচ্ছে ১৭ নভেম্বর থেকে। এদিন ব্রতীর নাহায়-খায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ছট উৎসব। ২০ নভেম্বর ঊষা অর্ঘ্য ও পারণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ছট উৎসব। বিবাহিত দম্পতির দীর্ঘায়ু, তাদের সন্তানদের সুখী জীবন এবং গৃহে সুখ-সমৃদ্ধি কামনায় ছট পুজো পালন করা হয়।
শুক্রবার প্রথম দিন নাহায়-খায়, শনিবার দ্বিতীয় দিন খরনা, রবিবার তৃতীয় দিন সন্ধ্যা অর্ঘ্য, সোমবার চতুর্থ দিন ঊষা অর্ঘ্য। প্রথম দিনে করলা, ছোলার ডাল ও ভাত নিবেদন করা গুরুত্বপূর্ণ। উপবাস যারা রেখেছেন, তাঁরা নাহায়-খায়ের দিনে খাবারে তা গ্রহণ করেন। উপবাস যারা রাখেন তাঁদের জন্য এই খাবার প্রস্তুত করা হয়। ছঠ মাতার পুজোর সময় উপবাসকারী বিবাহিত মহিলারা হলুদ রঙের বিশেষ সিঁদুর লাগিয়ে থাকেন। হলুদ সিঁদুরকে ভাকরা সিঁদুরও বলা হয়। সিঁদুর তাঁদের কাছে সৌভাগ্যের প্রতীক। পুজো শেষে বিবাহিতারা প্রতিটি উপবাসের সময় সিঁদুর ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া নয়া গম শস্য, চাল ও নানাবিধ ফলের প্রয়োজন হয় এই পুজোয়। যার মধ্যে কলা ও গোটা আখ অনিবার্য। এগুলি ঠেকুয়া, পিরাকিয়া বানানোর সময় দরকার পড়ে। ছট আরাধনার সময় সূর্যকে অর্ঘ্য অর্পণ করা বাধ্যতামূলক। সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করার সময় আখ ও কলার ফানা দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি নিবেদন ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ থাকে। খরনার পরের দিন অস্তগামী, সূর্যকে অর্ঘ্য দেওয়া হয় ও পরদিন সকালে সূর্যোদয়ের সময় সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। কলকাতায় শিয়ালদহ ও হাওড়ায় এই পুজো ধুমধাম করে পালিত হয়। আসানসোল ও দুর্গাপুরেও অসংখ্য মানুষ এই পুজোয় অংশ নেন। মূলত হিন্দিভাষীদের পুজো হলেও এখন বহু বাঙালি মানত হিসেবে এই পুজো করে থাকেন। বাংলাতেও ছটের গান রয়েছে। ভিড় সামলাতে গঙ্গার ধারে আগেভাগেই পুলিশের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।