নিউজ ডেস্ক: ২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসা
সংক্রান্ত আদালত অবমাননার মামলায় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করল কলকাতা হাই
কোর্ট। নতুন বৃহত্তর বেঞ্চে থাকবেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ, বিচারপতি হরিশ টন্ডন,
বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী। রাজ্যের
মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই মামলা শুনবে নতুন
বৃহত্তর বেঞ্চে। এই বেঞ্চে হাই কোর্টের দুই প্রবীণ বিচারপতিকে যুক্ত করা হয়েছে।
২০২১ সালে
বিধানসভা নির্বাচন পরে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে একগুচ্ছ
জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ওই বছর ১৯ অগস্ট ওই মামলাগুলিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
দিয়েছিল হাই কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছিল, ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র ঘটনায়
ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে। আদালতের ওই নির্দেশ কার্যকর
করা হয়নি এই অভিযোগ তুলে গত ২৮ নভেম্বর হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জনস্বার্থ
মামলার আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা যাঁদের
সম্পত্তি হানি, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুট,
এবং ক্ষতি করেছে তাঁদের অভিযোগ জমা নিয়েছে রাজ্য ‘লিগ্যাল সার্ভিসেস
অথরিটি’।
কিন্তু এখনও
পর্যন্ত কোর্টের নির্দেশ মেনে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। আদালত অবমাননা করেছে রাজ্য। এর
পরেই আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। রাজ্যের যুক্তি ছিল, কলকাতা
হাই কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী যে বা যে সব বিচারপতির নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি,
তাঁরাই আদালত অবমাননার মামলা শুনতে পারবেন। আগের পাঁচ বিচারপতির
মধ্যে দু’জন বিচারপতি কলকাতা হাই কোর্টে নেই। তাই পাঁচ বিচারপতির নতুন বেঞ্চ গঠন
না হওয়া পর্যন্ত এই মামলার শুনানি করা সম্ভব ছিল না।
প্রসঙ্গত ভোট পরবর্তী হিংসায় বহু মানুষ খুন হন। অনেকে বাড়ি ছাড়া
হন। বাড়ি ঘর ভেঙে চুরমার করা হয় প্রায় রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায়
বুল্ডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বিজেপি কর্মীর বাড়ি। রাজ্যে আসে একের পর এক কমিশন।
বেশ কয়েকটি ঘটনা সংবাদ শিরোনাম হলেও অনেক ঘটনা থেকে যায় প্রচারের আড়ালে। পাশাপাশি এই
মামলার তদন্ত সিবিআই করলেও শুধু হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ ও সাক্ষ্য গ্রহণ। দুষ্কৃতিরা এখনও
অধরা। তদন্তের ঢিমেতালে অখুশি অনেক আক্রান্ত পরিবার। তারা চান দ্রুত তদন্ত শেষ হোক
এবং আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিক রাজ্য সরকার।