নিউজ ডেস্ক: ২০১৯ এর পর ২০২৩। ৪ বছর পর আবারও আরও এক অজানা রোগের দেখা মিলেছে চিনের উত্তর ভাগে। ২০১৯ এর নভেম্বরে শেষদিকে উহান সহ চিনের বিভিন্ন অংশে দেখা মিলেছিল কোভিড-১৯ এর। যা চিনের পর ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন দেশে। এতবড় মহামাহীর জেরে কত মায়ের কোল খালি হয়ে গিয়েছিল, কত ছেলে-মেয়ে অনাথ হয়ে গিয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। চারবছর আগের সেই রেশ কাটতে দীর্ঘ সময় লেগেছিল। এবার আরও এক মহামারির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। এবছরও ফের নভেম্বরেই চিনে বসবাসকারী শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া শ্বাসকষ্টজনিত এক অজানা রোগের খবর মিলেছে।
পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে স্বাভাবিকভাবেই ফের মহামারির আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছে গোটা বিশ্ব। নতুন এই রোগের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে বেজিংকে চাপ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু। জবাবে চিন সরকারের বক্তব্য অস্বাভাবিক কোন জীবানু পাওয়া যায় নি। বরং একাধিক পরিচিত জীবানুর কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, উত্তর চিনে হঠাৎ করেই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে মূলত শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। চায়নায় গত তিন বছর ধরে নভেম্বরে জিরো-কোভিড কৌশল প্রযোজ্য ছিল। উল্লেখিত তিন বছরের তুলনায় এ বছর ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।২০২২ এর ডিসেম্বরে হঠাৎ করেই জিরো-কোভিড নীতি বাতিল করে চিন।এরপর এবছরের নভেম্বর দেশটিতে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত এক অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া (এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ যা মূলত ছোট শিশুদের মাঝে দেখা দেয়) ও রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।চিনের একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বেজিং, লিয়াওনিং ও উত্তর চিনের বেশ কিছু এলাকায় শিশু হাসপাতালগুলো ‘অসুস্থ রোগীদের চাপে’ হিমশিম খাচ্ছে।
আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উদ্বেগ বেড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। সম্ভাব্য মহামারির বিষয়ে বাড়তি তথ্য চাওয়া হয়েছে চিন কর্তৃপক্ষের কাছে, পাশাপাশি যেসব জায়গায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, সেখান থেকে গবেষণাগারের পরীক্ষার ফলাফলও চাওয়া হয়েছে। তাছাড়া চিন সরকার যতই এ বিষয়ে সঠিক তথ্য চাপা দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, হু-এর পক্ষ থেকে পরিস্থিতির দিকে সর্বদা সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে, পাশাপাশি চায়নার বিভিন্ন হাসপাতাল, চিকিৎসক এবং চিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছে হু। দেশটির স্বাস্থ্য সেবা খাতের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিনের মানুষকে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে টিকার সর্বশেষ ডোজগুলো নেওয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক পরা এবং অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকার উপদেশ দিয়েছে।অসুস্থ বোধ করলে পরীক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।