থাইল্যান্ডের ব্যাংককে রবিবার শেষ হওয়া তিন দিনব্যাপী বিশ্ব হিন্দু কংগ্রেস, বিশ্বাস ও চিন্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশের সাক্ষী হয়ে ওঠে, কারণ বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার হিন্দু নেতারা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন, হিন্দু সংস্কৃতির ঐক্য ও ঐতিহ্যের বার্তা তুলে ধরেছিলেন। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হিন্দু দর্শনের প্রয়োজনীয়তার কথা নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন। যদিও তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেননি, তবে তাঁর পাঠানো লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয় বিশ্ব হিন্দু সম্মেলনে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর মতে, ‘হিন্দু দর্শন, অহিংসা, সত্য, সহ্য-ক্ষমতা এবং সম্প্রীতির কথা বলে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং একটি সুশৃঙ্খল সমাজ তৈরি করতে এগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
এই সম্মেলনের উদ্বোধনের দিন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত বলেন, ‘হিন্দু ধর্মে অনেক মত রয়েছে, উপাসনার পদ্ধতি রয়েছে। এর প্রতিটিই হল ধর্মের উদাহরণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘সনাতন ধর্মকে বোঝাতে এবার থেকে ‘হিন্দুইজম’ নয়, ‘হিন্দুত্ব’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হবে।’ এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের কার্যকর্তা দত্তাত্রেয় হোসাবলে। হিন্দু সাংগঠনিক শক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং হিন্দু পুনরুত্থানের উপর বক্তৃতা দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রতি চার বছর অন্তর এই বিশ্ব হিন্দু সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। চলতি বছরে থাইল্যান্ডে এই সম্মেলন হয়। উপস্থিত ছিলেন ২,২০০ প্রতিনিধি। ৬১ দেশ থেকে এই প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন বলে জানান উদ্যোক্তারা। এখানে শিক্ষার পাশাপাশি রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, গবেষণা, এমনই বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে প্রতিনিধিরা হাজির হয়েছিলেন। এর আগে ২০১৪ সালে বিশ্ব হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল দিল্লিতে এবং ২০১৮ সালে তা হয়েছিল শিকাগোতে।
অন্যদিকে, হিন্দু রাষ্ট্রব্যবস্থা ফেরাও, ফেরাও রাজতন্ত্রও, এই দুই দাবিতে গত শুক্রবার নেপালের কাঠমান্ডুতে মিছিলে সামিল হয়েছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। জাতীয় ঐক্য ও দেশের মানুষের ভালর জন্যই যে হিন্দুরাষ্ট্র ও রাজতন্ত্রের প্রয়োজন, এমনটাই মত মিছিলে সামিল জনতার।