ভারত বারবারই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার অবস্থানকে স্পষ্ট করে দিয়েছে। বর্তমান ভারত দেখিয়েও দিয়েছে, সে মার খেয়ে চুপ করে বসে থাকতে জানে না। শত্রুর ঘরে ঢুকে তাকে জবাব দিতেও জানে। আর তাই বর্তমান ভারতকে দুর্বল ভেবে নিলে শত্রুপক্ষের কপালে যে দুঃখ আছে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সন্ত্রাসবাদকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলার ক্ষেত্রে ভারতের এই প্রয়াসে যে সব দেশ বারবার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চিন। অনেকের মতেই, সন্ত্রাসবাদীদের যেন নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে চিন। আর এর স্বপক্ষে অতীত থেকে বর্তমান- রয়েছে ভুরি ভুরি উদাহরণও।
মুম্বই হামলার ১৫ বছর অতিক্রান্ত। কিন্তু আজও তার রক্তাক্ত স্মৃতি ভারতবাসীকে ঘুমোতে দেয় না শান্তিতে। ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এলইটি সন্ত্রাসবাদীদের ব্ল্যাকলিস্ট করার চেষ্টা করে চলেছে, তবে, ইউএনএসসির স্থায়ী সদস্য চিন সেই প্রচেষ্টাতে বার বার বাধা দিয়ে চলেছে, আর পাকিস্তানও এই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে চলেছে। একদিকে ইসলামাবাদ সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিচ্ছে, অন্যদিকে তাদের বাইরে থেকে সমর্থন করছে বেজিং।
উদাহরণ স্বরূপ ২৬/১১-তে মুম্বই হামলার সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের কথাই ধরা যাক। এই হামলায় জড়িত থাকার জন্য পাকিস্তানি লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গি সাজিদ মীরকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য UNSC-তে প্রস্তাব রেখেছিল ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সেই প্রস্তাবে সরাসরি বাধা দিয়েছিল বেজিং। এর থেকেই চিনের অবস্থান একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে যায়।
এমনই আরও বেশ কিছু উদাহরণে চোখ রাখা যাক। ২৬/১১-র মুম্বই হামলার মূলচক্রী সন্ত্রাসবাদী হাফিজ সইদ থেকে শুরু করে এলইটি সন্ত্রাসবাদী আব্দুল রেহমান মক্কি, এলইটি নেতা শহীদ মাহমুদ, এমন সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ভারত যখনই কড়া অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে, তখনই কোনও না কোনওভাবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চিন।
বিভিন্ন দৃষ্টান্ত থেকে স্পষ্ট যে কীভাবে চীন বছরের পর বছর ধরে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার জন্য তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করছে। চিন-পাকিস্তানের মতো দেশ যতদিন সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাবে, ততদিনই সন্ত্রাসবাদকে তার শিকড়সহ উপড়ে ফেলা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে বর্তমান ভারত যে সন্ত্রাসবাদের কাছে কোনওদিনই মাথা নোওয়াবে না তা এতদিনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বের কাছে।