নিউজ ডেস্ক: ইংরেজ(British) আগমন পরবর্তী ভারতের ইতিহাসে যে সব মানুষের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে, যাঁরা নিজেরাই এক একটি অধ্যায় হয়ে উঠেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মহাত্মা গান্ধী (Mohan Das Karamchand Gandhi)। আজও তাঁর আদর্শ বহন করে চলেছে আরএসএস (RSS)।
মহাত্মা গান্ধী একজন কট্টর হিন্দু ছিলেন। হিন্দু ধর্ম, গোরক্ষা, স্বদেশী, অস্পৃশ্যতা দূরীকরণের বিষয়ে তাঁর চিন্তাধারাকে আজও আরএসএস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সঙ্ঘের সঙ্গে গান্ধীর সম্পর্ক ছিল খুবই ভালো। সঙ্ঘের প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। ১৯৩৪ সালে ওয়ার্ধার(wardha) কাছে সঙ্ঘের(RSS Camp) এক শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। গান্ধী (Gandhi)সেখানে গিয়েছিলেন। শিবিরে গিয়ে তাঁর মন ভরে গিয়েছিল। দেখেন জাত-পাতের ঊর্ধ্বে গিয়ে যুবরা সবাই এক ছাদের তলায় রয়েছেন। তা দেখার পর বেজায় খুশি হয়েছিলেন গান্ধী।
ভারতের (Bharat) স্বাধীনতার (Independence) পরে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় সঙ্ঘের অনুশাসনের প্রশংসা করেন গান্ধী। বলেছিলেন, “সঙ্ঘের নিয়মানুবর্তিতা ও সরলতা দেখে আমি মুগ্ধ। এমনকী, সেখানে জাত-পাতের কোনও বালাই নেই। সবাই সেখানে একসঙ্গে থাকেন।”
১৯২২ সালে গান্ধীজি গ্রেফতার(Arrest) হওয়ার পর নাগপুর শহর কংগ্রেস একটি জনসভার (Public Meeting) আয়োজন করে। ওই সভায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন ডাঃ কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার(Hegdewar)। গান্ধীজিকে ‘পূণ্যপুরুষ’ বলে সম্বোধন করে ডাঃ হেডগেওয়ার বলেছিলেন, উনি যে কথা বলেন, সেটাই করে দেখান। ওঁর মত ও পথের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। নিজের মতাদর্শের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করতেও উনি মনেপ্রাণে প্রস্তুত। শুধুমাত্রা গান্ধীজির ‘গুণবর্ণনা’ করলে অবশ্য তাঁর মতাদর্শ ও কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। গান্ধীজির এইসব গুণ অনুকরণ করে ব্যক্তিগত জীবনকে সেই পথে চালিত করলে তবেই তাঁর মতের ও কাজের প্রসার ঘটানো সম্ভব হবে।
গান্ধীর সঙ্গে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের (Deen Dayal Upadhyay)অনেক মিল রয়েছে। গান্ধী এবং উপাধ্যায় প্রাথমিকভাবে সংগঠক ছিলেন। তাঁরা দু’জনেই ক্ষমতায় সরাসরি অংশগ্রহণ থেকে দূরে থাকতেন। নেপথ্যে ও মাটির কাছাকাছি থেকেই পরিচালনা করায় বিশ্বাসী ছিলেন তাঁরা। তাঁদের আদর্শকে পাথেয় করেই এগিয়ে চলেছেন বহু মানুষ।
দেশের মহাপুরুষদের স্মরণ করার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্থাপনার দিন থেকেই সকালে একটি স্তোত্র পাঠের রীতি রয়েছে। ১৯৬৩ সালে তা পুনর্বার রচনা করে নতুন করে অনেকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গান্ধীজির নামও ওই স্তোত্রে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকরা প্রতিদিন সকালে গান্ধীজির নাম উচ্চারণ করে তাঁর কথা স্মরণ করেন।